উত্তর কোরিয়ার ‘ক্ষেপণাস্ত্রবাহী’ জাহাজ আটক করেছে পানামা

উত্তর কোরিয়ার ‘অঘোষিত সামরিক সরঞ্জামবাহী’ একটি জাহাজ আটক করেছে পানামা। জাহাজ থেকে ৩৫ জন নাবিককেও আটক করা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিকার্ডো মার্টিনেইলি এ কথা জানিয়েছেন। উত্তর কোরিয়ার ওপরে জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমকে পানামার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার পতাকাবাহী ওই জাহাজ কিউবা থেকে আসছিল। জাহাজটিতে সন্দেহভাজন ‘অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র সামগ্রী’ রয়েছে। পানামা খালের আটলান্টিক মহাসাগরের দিকের মানজানিলো এলাকা থেকে জাহাজটিকে আটক করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মার্টিনেইলি তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি ছবি পোস্ট করেছেন, যেটিকে জাহাজের একটি কনটেইনারের ভেতরে থাকা সবুজ রঙের বড় একটি বস্তু বলে মনে হয়। তিনি জানান, ভেতরে কী কী আছে তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য জাহাজটিকে আটক করা হয়েছে। পানামার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ প্রথমে জাহাজটিতে মাদক রয়েছে এমন সন্দেহের বশে তল্লাশি চালায়। পরে জাহাজে থাকা চিনির কনটেইনারগুলোতে ‘সন্দেহভাজন অস্ত্রশস্ত্র’ খুঁজে পায়। স্থানীয় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমরা জাহাজটির মাল খালাস করা অব্যাহত রেখেছি এবং ভেতরে আসলে কী আছে তা পরীক্ষা করে দেখছি।’ জাহাজ থেকে ৩৫ জন নাবিককে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন তল্লাশি চলাকালে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। উত্তর কোরিয়ার ওপরে জাতিসংঘের যে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে, তার আওতায় দেশটি ক্ষুদ্র অস্ত্র ছাড়া কোনো ধরনের অস্ত্র আমদানি বা রপ্তানি করতে পারে না। গত ১২ ফেব্রুয়ারি দেশটি তৃতীয় দফায় পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পরিপ্রেক্ষিতে নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার করা হয়। এর মধ্যে ছিল সন্দেহজনক জাহাজে তল্লাশি চালানোর বিষয়ে রাষ্ট্রগুলোকে আরও বেশি কর্তৃত্ব দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তর কোরিয়ার বেশ কিছু জাহাজে তল্লাশি চালানো হয়েছে। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে মার্কিন নৌবাহিনী একটি উত্তর কোরীয় জাহাজকে সন্দেহভাজন অস্ত্র বহনকারী হিসেবে শনাক্ত করে। মিয়ানমারগামী জাহাজটি পরে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। উত্তর কোরিয়া তার ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটাতে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। দেশটি গত ডিসেম্বরে একটি স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠায়। স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণে তিন স্তরবিশিষ্ট একটি রকেট ব্যবহার করা হয় বলে দেশটি জানায়। জাতিসংঘ ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তখন বলেছিল, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের আড়ালে দেশটি নিষিদ্ধ দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কমিউনিস্ট রাষ্ট্রটি এমন একটি ছোট পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে, যা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রে ব্যবহারের উপযোগী হবে। বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.