নিজস্ব ক্যাম্পাস- নূ্যনতম শর্ত পূরণ করতেই হবে

দুই দফা সময় বেঁধে দেওয়ার পরও স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়তে ব্যর্থ হওয়া ৩৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শিগগরিই 'কঠোর' ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়_ মঙ্গলবার সমকালে প্রকাশিত এই খবরে আমরা আরেকবার আশান্বিত হতে চাই।
আমরা আশা করি, কঠোর ব্যবস্থা কিংবা তৃতীয় দফা সময় বৃদ্ধি_ কোনোটিরই প্রয়োজন হবে না। সরকারি নির্দেশনা শুধু নয়, শিক্ষার্থীদের চাহিদা ও সুবিধার কথা বিবেচনা করেও ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ক্যাম্পাস গড়তে উদ্যোগী হবে বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যেসব সমালোচনা রয়েছে, তার প্রথমটি হচ্ছে নিজস্ব ক্যাম্পাস না থাকা। আইনানুযায়ী প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছরের মধ্যে নিজস্ব ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা থাকলেও পাঁচ বছর পেরিয়ে যাওয়া ৫২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এই শর্ত পূরণ করতে পেরেছে মাত্র ১৭টি। এই অনুপাত গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমরা জানি, দেশের উচ্চশিক্ষার্থী যে হারে বাড়ছে, সরকারি শিক্ষায়তন ও আসন সংখ্যা তার সঙ্গে পাল্লা দিতে না পারার প্রেক্ষাপটে নব্বই দশকের গোড়ায় দেশে সূচিত হয়েছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ। কয়েক দফায় বৃদ্ধি পেয়ে এর সংখ্যা এখন ৭১। হতে পারে, উচ্চশিক্ষার প্রতি বিপুল জনগোষ্ঠীর আগ্রহ এবং তার ব্যবস্থা করতে রাষ্ট্রীয় সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় এই সংখ্যা বৃদ্ধি বাস্তবসম্মত ছিল। হতে পারে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা আরও বাড়ানো দরকার। কিন্তু নূ্যনতম মান ধরে রাখা ও উন্নয়ন করতে না পারলে শুধু সংখ্যা বাড়িয়ে লাভ কী? এ ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে অনুমোদন পাওয়া সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যাতে নিজস্ব ক্যাম্পাসের মতো নূ্যনতম জায়গা প্রদর্শন করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে। যদি না পারে, তাহলে 'কঠোর' ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া গতি কী? আমরা জানি, কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে পেরেছে। কিন্তু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নামসর্বস্ব হয়ে পড়ায়, কোনো কোনোটির বিরুদ্ধে সনদ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠায় গোটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খাতই দুর্নামের ভাগী হচ্ছে। নিম্নমানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো না থাকলে যেমন গোটা খাতের ভাবমূর্তি বাড়বে, তেমনি মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগীদের সুযোগ বাড়বে।

No comments

Powered by Blogger.