নারী অধিকার বিল তোলার পরই আলোচনাবন্ধ

আফগানিস্তানে নারী অধিকারের পক্ষে একটি বিল পার্লামেন্টে তোলার পর তুমুল হট্টগোলের মুখে এ নিয়ে আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল শনিবার অনুমোদনের জন্য বিলটি পার্লামেন্টে তোলা হলে এর বিপক্ষের এমপিদের হট্টগোলের মুখে ১৫ মিনিটের মাথায় স্পিকার বিতর্ক বন্ধ করে দেন। রক্ষণশীল পার্লামেন্ট সদস্যরা ওই প্রস্তাবিত আইনকে শরিয়া পরিপন্থী হিসেবে আখ্যায়িত করে তা বাতিল করার দাবি জানান। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ২০০৯ সালে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, বাল্যবিবাহ ও জোর করে বিয়ে দেওয়া বন্ধ করার বিষয়ে একটি আইন জারি করেন। তবে আইনটি এখনো পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয়নি। বিদ্যমান আইনে ইতিমধ্যে কয়েক শ লোকের কারাদণ্ড হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে যুক্তিতর্ক শুরু হওয়ার পর এমপিদের মধ্যে রক্ষণশীল নেতারা কঠোর ভাষায় হামিদ কারজাইয়ের সমালোচনা করেন। তাঁদের অভিযোগ, এই আইনে স্বাক্ষর করে কারজাই শরিয়া আইনের বিরুদ্ধাচরণ করেছেন। তবে পরবর্তী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান আইনটি বলবৎ থাকবে বলে জানা গেছে। আলোচিত আইনে বলা হয়েছে, আফগান পুরুষেরা স্ত্রীদের সঙ্গে তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সংসর্গ করতে পারবেন না। রক্ষণশীল নেতাদের দাবি, আইনটি সংশোধন করে, স্ত্রীকে ‘ধর্ষণ’ করার জন্য স্বামীদের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না মর্মে বিধান রাখতে হবে। আইনটি পার্লামেন্টে পাস করানো নিয়ে আফগানিস্তানের নারী অধিকারকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। আইনটি সুরক্ষিত ও শক্তিশালী করতে অনেকে তা পার্লামেন্টে পাস করানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। তাঁদের আশঙ্কা, পার্লামেন্টের অনুমোদনের মাধ্যমে পোক্ত না হলে ভবিষ্যতে এটি বাতিল হতে পারে। অন্য পক্ষের নারী অধিকারকর্মীরা আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, আইনটি নিয়ে পার্লামেন্টে তুমুল বিতর্ক হতে পারে। এতে বিদ্যমান আইনটি আরও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।  বিলটি পার্লামেন্টে তোলার ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানকারীদের অন্যতম এমপি ফাওজিয়া কুফি। তিনি দুই বছর আগে তালেবানের হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে যান।

No comments

Powered by Blogger.