আটকের ৯ ঘণ্টা পর বিএনপির ৪৮ নেতা-কর্মী ছাড়া পেলেন

কারা ফটক থেকে বিএনপির ৫৩ নেতা-কর্মীকে গতকাল শনিবার আটকের প্রায় নয় ঘণ্টা পর ৪৮ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুরে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে ৩৫ জন ও পার্ট-২ থেকে বিএনপির ১৮ জন নেতা-কর্মী জামিনে মুক্তি পান। বের হওয়ার পরপরই উভয় কারাগারের ফটক থেকে তাঁদের আটক করে পুলিশ। গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আটক হওয়া ৫৩ জনের মধ্যে ৪৮ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোন পাঁচজন আটক রয়েছেন, তা জানা যায়নি। এর আগে সন্ধ্যায় নেতা-কর্মীদের নতুন করে আটকের কারণ জানতে চাইলে মাসুদুর রহমান বলেছিলেন, সম্প্রতি যেসব ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা হয়েছে, তাতে তাঁদের কারও বিরুদ্ধে কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই করে কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হলে ছেড়ে দেওয়া হবে। একইভাবে জামিনে মুক্তির পর কারা ফটক থেকে ৮ মে যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন ও ১৬ মে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া জামিনে মুক্ত যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লা ১৬ মে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। সেখান থেকে বের হওয়ার পরপরই তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এভাবে কারা ফটক থেকে দলীয় নেতাদের আটক করে বিভিন্ন মামলায় আবার গ্রেপ্তার দেখানোর ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সরকার আইনকানুন মানছে না। বিরোধী দলকে দমন করতে তারা হামলা-মামলা বেছে নিয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, বিএনপির ওই ৫৩ জন নেতা-কর্মীর জামিনের কাগজপত্র আদালত থেকে গত শুক্রবার কারাগারে পৌঁছায়। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে গতকাল বেলা দুইটার দিকে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর কারা ফটক থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাঁদের আটক করে নিয়ে যায়। কারাগারের পার্ট-১ থেকে আটক হওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা হলেন আবু তাহের, বিল্লাল হোসেন, মো. বশিরুল, মেহেদী হাসান, মো. শাহজাহান, তোজাম্মেল হক, মো. কাশেম মজুমদার, আশরাফুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান, আবদুল কাদির জিলানী, আজগর আলী, মো. এশাখুল, মো. নাসির উদ্দিন, ইমরুল কায়েস, জিয়াউল হক, জুলফিকার আলী ভূঁইয়া, আসাদুজ্জামান, আনোয়ার হোসেন, ওমর ফারুক প্রমুখ। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর কারাধ্যক্ষ মো. নেছার আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কারাগার-২-এর উপকারাধ্যক্ষ মো. মাসুম জানান, সেখান থেকে গতকাল দুপুরে একই মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়া বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৮ জন নেতা-কর্মীকে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর ফটক থেকে ডিবির সদস্যরা তাঁদের আটক করে নিয়ে যান। গত ১১ মার্চ বিএনপির সমাবেশের দিন ভাঙচুর, বোমা বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে এই ৫৩ জনসহ মোট ১৫৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।

No comments

Powered by Blogger.