অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান নিয়েই আলোচনা

তত্ত্বাবধায়ক নয়, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন করার কথা পুনরুল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কে হবেন। গতকাল রোববার দুপুরে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফ এসব কথা বলেন। ১৫ মে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বর্ধিত সভায় গৃহীত রাজনৈতিক প্রস্তাব ও সিদ্ধান্তগুলো জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান থাকছেন—আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের ওই সভায় এ বিষয়ে আলোচনার কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে এলেও বিষয়টি এড়িয়ে যান আশরাফ। তিনি বলেন, ‘আমরা তো নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থার কথা বলেছি। এখানে তো কোনো ব্যক্তির নাম নেই। আমরা তো কারও নাম বলিনি।’ এসব বিষয় চূড়ান্ত করতে বিরোধী দলকে সংসদে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে। এর বিরোধিতা করে এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল করার দাবিতে আন্দোলন করছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। তা না হলে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ার করে আসছে। সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বিরোধী দলকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়া হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ইতিমধ্যে বিরোধী দলকে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছেন। সংসদে এসে তিনি তাদের দাবি পেশ করার কথা বলেছেন। ‘সংসদে গিয়ে আমরা কোনো ফর্মুলা পেশ করব না। কারণ, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সেটা সরকার বাতিল করে দেবে’—বিরোধী দলের এমন অবস্থানের বিষয়ে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘তাদের প্রস্তাব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেখানে আলোচনা হবে। এই আলোচনা ভোটাভুটির মাধ্যমে বাতিল করা হবে, সেটা তো বলা হয়নি।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শর্তহীন সংলাপে রাজি হয়েছেন। তা হলে সরকারের পক্ষ থেকে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি সাড়া মিলছে না কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে আশরাফ বলেন, ‘একবার তিনি বললেন, তলে তলে আলোচনা হয় না। আমাদের আলোচনার আহ্বানকে গুরুত্ব না দিয়ে তিনি আলটিমেটাম দিয়ে আমাদের সংলাপের প্রস্তাব নাকচ করে দিলেন। তাঁর কোনো প্রস্তাব দেওয়ার আগে নিকট অতীতে কী হয়েছে, সেটা মনে রাখতে হবে।’
সৈয়দ আশরাফ বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করে, বর্তমান সংবিধানের আওতায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কেবল নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই করা সম্ভব। সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা ২০০৭-০৮ সালের পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে কোনো অসাংবিধানিক ব্যবস্থা বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সর্বশেষ বর্ধিত সভায় বিএনপি-জামায়াত জোটের হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভিত্তি সুদৃঢ় করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.