স্বৈরশাসক ভিদেলারমৃত্যু

আর্জেন্টিনার ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় ‘ডার্টি ওয়ারের’ সময়কার স্বৈরশাসক হোর্হে ভিদেলা (৮৭) গত শুক্রবার কারাগারে মারা গেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তিনি রাজধানী বুয়েনস এইরেসের মার্কাস পাজ কারাগারে দণ্ড ভোগ করছিলেন। স্বাভাবিক কারণেই ভিদেলার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। জেলখানার চিকিৎসক তাঁর প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, গত শুক্রবার সকালে ভিদেলাকে কারাগারের শৌচাগারে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে বিচার বিভাগ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৯৭৬ সালে আর্জেন্টিনার শাসন ক্ষমতা দখলের পর জেনারেল ভিদেলা বামপন্থীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন। দেশটির ইতিহাসে তা ‘ডার্টি ওয়ার’ নামে পরিচিত। ওই অভিযানে অপহূত ও গুম হন প্রায় ৩০ হাজার বামপন্থী সাংবাদিক, ছাত্র ও গেরিলা বাহিনীর সদস্য। গোপন কারাগারে তাঁদের নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। ভিদেলা ১৯৮১ সালে ক্ষমতা ছাড়েন। ২০০৬ সালে আর্জেন্টিনার ইতিহাসের কালো অধ্যায়ের জন্য দায়ী সামরিক কর্মকর্তাদের নতুন করে বিচার শুরু হয়। ভিদেলার বিরুদ্ধে ৩১ জন বন্দীকে গুমের আদেশ দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১০ সালে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর ২০১২ সালে অনেক নারী বন্দীর সদ্যোজাত সন্তান গুমের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে ৫০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।  ভিদেলা কখনোই তাঁর বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগ স্বীকার করেননি। কৃতকর্মের জন্য তিনি কোনো অনুশোচনায় ভুগতেন না বলেও জানা যায়। স্থানীয় একজন সাংবাদিককে তিনি কারাগারে বলেন, সেনা কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, নাশকতার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার মূল্য হিসেবে কারাবন্দীদের গোপনে সরিয়ে দেওয়ার দরকার ছিল। কারণ, সাত-আট হাজার বন্দীকে ফায়ারিং স্কোয়াড বা আদালতে তোলা সম্ভব ছিল না।

No comments

Powered by Blogger.