পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নত করার তাগিদ

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশের উন্নয়ন দ্রুততর করার অনুরোধ জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। এ লক্ষ্যে তিনি কারখানার অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা ও ভবনের নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন-প্রক্রিয়ার অগ্রগতি দ্রুততর করতে বলেছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের শ্রম আইন সংশোধন-প্রক্রিয়াও দ্রুত শেষ করার অনুরোধ জানান।গতকাল শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব অনুরোধ জানান।এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা (জিএসপি) অব্যাহত রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশের শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন দীপু মনি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধ রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টার আশ্বাস দিয়েছেন জন কেরি।মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইট ও ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনা করেন। তাঁদের আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের প্রস্তাব, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি ও তাদের সাম্প্রতিক ঢাকা অবরোধ, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রসঙ্গগুলো এসেছে।বৈঠকে রানা প্লাজাধসে সহস্রাধিক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান জন কেরি। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা শ্রমিক, শ্রমিকের অধিকার ও শ্রমমানের উন্নতিতে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে সহায়তা করবে। আমরা জানি, এ ব্যাপারে আপনারা কঠোর পরিশ্রম করছেন এবং ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন।’
শ্রমিকদের অধিকার এবং কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের অঙ্গীকারের বিভিন্ন দিক জন কেরির কাছে তুলে ধরেন দীপু মনি। তিনি জানান, সংসদের আগামী অধিবেশনে সংশোধিত শ্রম আইন উত্থাপন করা হচ্ছে।
দীপু মনি যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা বাড়াতে জন কেরির কাছে অনুরোধ জানান। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ অনুরোধ রাখতে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আগ্রহী। এ লক্ষ্যেই নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারপদ্ধতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অগ্রগতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে দীপু মনি বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়ে ’৭১-এর গণহত্যার বিচার হচ্ছে। এ সময় জন কেরি বলেন, এ বিচার গুরুত্বপূর্ণ। তবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণে অবাধ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে বিচার-প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
দেশজুড়ে জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব ও হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবির বিষয়ে জানান দীপু মনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তাদের সহিংসতা ও মধ্যযুগীয় দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

No comments

Powered by Blogger.