শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি- রাহুল শর্মা

পরীক্ষা একেবারেই সন্নিকটে। এই সময়ে মানসিক, শারীরিকভাবে সুস্থ থেকে রুটিনমাফিক পড়াশোনা কর, রেজাল্ট আশানুরূপ হবেই। সঠিক পরিকল্পনা : প্রস্তুতির প্রথমে দরকার পরিকল্পনা। সঠিক পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন ভাল ফল অর্জনে সহায়ক।
পেছনের নষ্ট হওয়া সময়ের কথা মাথা থেকে ফেলে দিতে হবে প্রথমেই। এখন যেটুকু সময় হাতে আছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহারে মনোযোগী হতে হবে।
ইতিবাচক পরিকল্পনা : নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরীক্ষায় খারাপ ফলের জন্য দায়ী। এ জন্য মনের এলোমেলো চিন্তা দ্রুত ঝেড়ে ফেলতে হবে। সার্বিক প্রস্তুতি যদি তোমার মনঃপূত না হয়েও থাকে তারপরও দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। তোমার ভা-ারে যা আছে তাই ঠিকমতো কাজে লাগাও। অবশ্যই তুমি সফল হবে।
মনকে চাপমুক্ত রাখ : পড়াশোনার চাপে যদি ধরাশায়ী হওয়া চলবে না। মনকে সব সময় ফুরফুরে রাখতে হবে।
টাইম ম্যানেজমেন্ট : পরীক্ষার জন্য স্পেশাল প্রস্তুতির তালিকায় একেবারে প্রথমে আসবে এই ব্যাপারটি। টাইম ম্যানেজমেন্ট বলতে শুধু কটা সময় ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসবে, তা ঠিক করা নয়। সারাদিনের সময়ের হিসাব হবে ঘণ্টা ধরে। যেমন, সকাল সাতটা থেকে নয়টা পর্যন্ত নতুন পড়া তৈরি করবে বা দুপুর তিনটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত পুরনো পড়া ঝালিয়ে নেবে ইত্যাদি। সপ্তাহের সাত দিনের রুটিন তৈরি করতে হবে এভাবেই। এটা করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন ব্যাপারটা একঘেয়ে না হয়। চেষ্টা করবে পড়ার মধ্যে বৈচিত্র্য আনতে। এক সপ্তাহের রুটিন করা হয়ে গেলে পরের সপ্তাহে এটা একটু পাল্টে নাও। গত সপ্তাহের সোমবারে যা পড়েছিলে, এই সপ্তাহে তা আসুক বৃহস্পতিবারে।

বিষয় নিয়ে ভাবনা

এটা অবশ্য যার যার নিজের ভাবনার ব্যাপার। আগে নিজে ঠিক কর কোন্ বিষয়টা তুমি এখনও আয়ত্ত করতে পারনি, বেশি জোর দাও সেই বিষয়ের ওপর। যেগুলো ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে সেগুলো নিয়মিত ঝালিয়ে নিতে হবে। যদি দেখ, বরাদ্দ সময়ের আগেই কোন পড়া শেষ হয়ে গেল, তা হলে উঠে না পড়ে অল্প তৈরি হওয়া অন্য কোন প্রশ্ন ঝালিয়ে নাও একবার। মোটকথা, ফাঁক পেলেই সময়ের সদ্ব্যবহার করবে। যাদের পড়ার বিষয়ের মধ্যে আঁকার একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা আছে, দুপুর বেলাটা তা সে জন্য রাখতে পার। খুব ভাল হয় যদি পড়ার পাশাপাশি সময় ধরে উত্তর লেখার অভ্যাস করা যায়।

পরীক্ষার আগের রাতে

পরীক্ষার আগের রাত সকল পরীক্ষার্থীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষার আগের রাতে যতটা না পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে তার চেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে পরীক্ষা সংক্রান্ত টেনশন নিয়ে। এই সময়ে একদম টেনশন করা যাবে না। যা পড়েছ তাই যথেষ্ট, এটা মনে রাখবে। যেগুলো রিভিশন করতে পারনি, সেগুলো নতুন করে পড়ার চেষ্টা না করাই ভাল। না হলে জানা বিষয়গুলো তুলে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় কমপক্ষে সাত ঘণ্টা ঘুমের দরকার। পরীক্ষার হলের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম রাতেই গুছিয়ে ফেলবে।

পরীক্ষার দিনে

পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার আগে প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, কলম, পেন্সিল, জ্যামিতি বক্স, শার্পনার, ইরেজার ও ক্যালকুলেটর ইত্যাদি মনে করে নিয়ে নেবে।
পরীক্ষা কেন্দ্রে গমন : পরীক্ষা শুরু হবার এক ঘণ্টা আগে ঘর থেকে বের হতে হবে। অবশ্য বাড়ি থেকে কেন্দ্রের দূরত্ব, ট্রাফিক জ্যাম ও যানবাহনের পাওয়া না পাওয়ার ওপর সময়ের হেরফের হওয়ার ব্যাপারটি নির্ভর করে।
পরীক্ষার খাতা পাওয়ার পর : পরীক্ষার খাতা পাওয়ার পর নির্ভুলভাবে রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ অন্যান্য বিষয় পূরণ করতে হবে। কোন ভুল হলে সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককে জানাতে হবে। এ ছাড়া অতিরিক্ত খাতা নিলে তার নম্বর সঠিকভাবে লিখতে হবে।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগ মুহূর্ত : পরীক্ষা শেষ হবার ১৫ মিনিট পূর্বেই একটি সতর্ক ঘণ্টা বাজে। এ সময়ের মধ্যেই লেখা শেষ করতে হবে এবং খাতাটি প্রথম থেকে পড়া শুরু কর এবং প্রয়োজনীয় সংশোধন কর।

বিশেষ সতর্কতা

পরীক্ষার সাল : প্রথমে এসএসসি পরীক্ষা লেখার পাশে বক্সে ভেতরে পরীক্ষার সাল ২০১৩ লিখবে।
বোর্ড : এবার বোর্ড লেখা বক্সে মধ্যে যে বোর্ড থেকে তুমি পরীক্ষা দেবে, সে বৃত্তটি ভরাট করবে।
পরীক্ষা : এখন পরীক্ষা বক্সে লেখা রয়েছে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার নাম। তুমি এসএসসি পরীক্ষার ঘরে বৃত্ত ভরাট করবে।
রোল নম্বর : এরপর দেখবে রোল নম্বরের ঘরটি। প্রথমে ফাঁকা ঘরে তোমার রোল নম্বরটি লিখবে এবং পরে বল পয়েন্ট দিয়ে বৃত্ত ভরাট করবে।
বিষয় কোড : এবার বিষয় কোডের ঘরে বিষয় কোডটি লেখ।
অতিরিক্ত খাতার নম্বর : অতিরিক্ত উত্তরপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর ক্রমিক নম্বর উত্তরপত্রের ওএমআর ফরমের নির্দিষ্ট স্থানে লিখবে এবং ক্রমিক নম্বরের পাশের ছোট বৃত্তাকার ঘরটি ভরাট করে দেবে।

No comments

Powered by Blogger.