উড়বে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী বিমান

এক ঘণ্টারও কম সময়ে নিউইয়র্ক থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসে পৌঁছার স্বপ্ন এখন পূরণ হওয়ার পথ মাত্র এক ধাপ পেছনে, এমনটিই দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান উড্ডয়ন বিশেষজ্ঞরা।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমে পরিবেশিত তথ্য অনুযায়ী বিজ্ঞানীরা মঙ্গলবার এমন একটি দ্রুতগতির হাইপারসনিক জেট বিমানের উড্ডয়ন ক্ষমতা পরীক্ষা করতে যাচ্ছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ও পূর্ব উপকূলের মধ্যে উড্ডয়ন সময়সীমাকে এক ঘণ্টারও নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম।
মঙ্গলবার প্রশান্ত মহাসাগরে একটি বি-৫২ যুদ্ধ বিমানের পাখনায় ভর করে ‘এক্স-৫১ এ’ ওয়েভ রাইডার নামে অভিহিত বিমানটি পরীক্ষামূলকভাবে আকাশে উড়বে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম।

ধারণা করা হচ্ছে ম্যাক-৬ গতিবেগ বিশিষ্ট ওয়েভ রাইডার উড্ডয়নের সময় সাগরে ভেঙে পড়ার আগেই ঘণ্টায় ৩ হাজার ৬শ’ মাইল গতিবেগে প্রায় ৩০০ সেকেন্ড আকাশে ভেসে থাকতে সক্ষম হবে। পরীক্ষা সফল হলে এটি হবে বিশ্বের ইতিহাসে পরীক্ষামূলক উড্ডয়নে যে কোনো বিমানের প্রাপ্ত সর্বোচ্চ গতিবেগ।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বিবরণ অনুযায়, ওয়েভ রাইডার কর্মসূচির সফলতা যাত্রীবাহী বিমান নির্মাণের এমন একটি সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে, যার সুবাদে ভবিষ্যতে বিমানে করে যুক্তরাষ্ট্রের এক উপকূল থেকে আরেক উপকূলে পৌঁছতে সময় লাগবে মাত্র ৪৬ মিনিট।

বিমানটির নিমার্তা প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়োতে অবস্থিত ‘এয়ার ফোর্স রিসার্চ ল্যাবেরটরির বিজ্ঞানী রবার্ট এ মারসিয়ার বলেন, ‘বিমানটির এ গতিবেগ অর্জন ধীরে ধীরে দূরপাল্লার ভ্রমণকে বর্তমানের প্রপেলার চালিত বিমান থেকে হাইপারসনিক জেট প্রযুক্তির দিকে ধাবিত করবে।’

এছাড়া পরবর্তী সময়ে এ প্রযুক্তি ক্ষেপণাস্ত্র, মহাকাশ যান এবং যুদ্ধবিমান নির্মাণের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, এর আগেও ওয়েভ রাইডার কর্মসূচির একটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন ব্যর্থ হয়ে যায় গত বছরের জুন মাসে। এদিকে পরীক্ষার আগে এক বিবৃতিতে পেন্টাগন জানিয়েছে, তারা গত এক দশকে এ ধরণের উচ্চগতির আকাশ যান নির্মাণে প্রায় দুইশ’ কোটি ডলার খরচ করেছে। ওয়েভ রাইডার কর্মসূচির জন্য তাদের খরচ হয় প্রায় ১৪ কোটি ডলার।

এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গতির যাত্রীবাহী বিমান হলো কনকর্ড। ২০০৩ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত  এটি ঘণ্টায় প্রায় ১ হাজার ৩৫০ মাইল গতিতে আটলান্টিক পাড়ি দিতে সক্ষম ছিলো। মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় এটি আটলান্টিক পাড়ি দিতো। অথচ বর্তমানের প্রচলিত বাণিজ্যিক যাত্রীবাহী বিমানগুলো এর দ্বিগুণেরও বেশি সময় নিয়ে থাকে।

No comments

Powered by Blogger.