‘পশ স্পাইস’-এ মাত

পাঁচটা কালো ট্যাক্সির ছাদে দাঁড়িয়ে ‘মঞ্চে’ প্রবেশ পাঁচ লাস্যময়ীর। কিন্তু অলিম্পিক স্টেডিয়ামে উপস্থিত আশি হাজার দর্শকের চোখ যেন আটকে তাদের মধ্যে বিশেষ এক জনের উপরেই! যাবতীয় আগ্রহ যেন ঘুরপাক খাচ্ছে স্টিলেটো পরিহিতা, কালো গাউনে মোড়া শরীরটাকে ঘিরেই।

বাঁ হাতে মাইক, ডান হাতে ধরা ট্যাক্সির গ্রিল। একটু যেন নার্ভাস! তাতে কী? নামটা তো ‘পশ স্পাইস’ ওরফে ভিক্টোরিয়া বেকহ্যাম!
বিশ্ববিখ্যাত পপ-দল ‘স্পাইস গার্ল’-এর প্রাক্তন সদস্য। রোববার অলিম্পিকের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে দলের আরও চার সদস্য মেলানি ব্রাউন, এমা বান্টন, মেলানি চিশোম এবং গেরি হ্যালিওয়েলের সঙ্গে তাকে ফের মঞ্চে দেখল গোটা দুনিয়া। এবং এটাই সম্ভবত ‘স্পাইস গার্ল’-এর পাঁচ সদস্যের এক সাথে শেষ স্টেজ-শো।

স্পাইস গার্ল-এর মঞ্চ থেকে দীর্ঘদিনই বহু দূরে ভিক্টোরিয়া। ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবেই এখন তার পরিচিতি বেশি। তবে বৃটিশ নাগরিক হিসেবে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’-এ যুক্ত থাকার টানটা সম্ভবত এড়াতে পারেননি ভিক্টোরিয়াও। সুতরাং ‘অবসরের’ মোড়ক ছেড়ে বেরোলো তার পুরনো ‘স্পাইস গার্লস’ সত্তা। স্টেডিয়ামের পাশাপাশি টেলিভিশনের দৌলতে গোটা বিশ্ব দেখল এই আটত্রিশেও এতটুকু কমেনি চার সন্তানের মা ভিক্টোরিয়ার আবেদন। তার গানের তালে, নাচের ছন্দে অংশ নিয়ে ঠাসাঠাসি স্টেডিয়াম যেন সেই আবেদনেই মাত হওয়ার বার্তা দিয়ে গেল। বাদ পড়লেন না সস্ত্রীক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং লন্ডনের মেয়র বরিস জনসনও!

মাত ভিক্টোরিয়া নিজেও। অনুষ্ঠানের শেষে টুইট করেছেন, “এক রাতের জন্য আমি পপস্টার হয়ে গিয়েছিলাম! ধন্যবাদ মেলানি বি, মেলানি সি, গেরি, এমা!”

ঘটনাচক্রে এবারের আলিম্পিকে বৃটিশ ফুটবল দলে ঠাঁই পাননি ভিক্টোরিয়ার স্বামী ডেভিড বেকহ্যাম। তবে, টাওয়ার বৃজ থেকে অলিম্পিক পার্ক পর্যন্ত যে স্পিড বোটে আনা হয়েছিল অলিম্পিক মশাল, তা চালিয়ে আনেন এই বৃটিশ ফুটবলার। বিশ্বের দরবারে বৃটেনের অন্যতম ‘মুখ’ ডেভিডের অলিম্পিকে অংশগ্রহণ বলতে ওই টুকুই! রোববারের সমাপ্তি অনুষ্ঠান যে ভাবে মজে রইল ভিক্টোরিয়া আর তার ‘স্পাইস গার্ল’-এ, তাতে মনে হলো অভাবটা সুদে-আসলে পুষিয়ে নিয়ে গেলেন ‘পশ স্পাইস!’

অলিম্পিকের সরকারি রেকর্ডবুক বলছে, ‘লন্ডন ২০১২’-য় নাকি মেয়েদের জয়জয়কার! কথাটা নিতান্ত অমূলক নয়। এ বারই প্রথম প্রত্যেকটি অংশগ্রহণকারী দেশে কমপক্ষে এক জন করে মহিলা সদস্য রয়েছেন। আমেরিকার মোট পদকের ৬৫ শতাংশই নিয়ে ফিরছেন মেয়েরা। প্রথম বার অলিম্পিকের ক্রীড়াসূচিতে স্থান পেয়েছে মেয়েদের বক্সিং। শেষ দিনের মঞ্চেও স্পাইস গার্লদের দাপট যেন সেই জয়যাত্রাকেই চূড়ান্ত প্রতিষ্ঠা দিয়ে গেল! সূত্র: ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.