তিস্তা অভিমুখে লংমার্চ-মানুষ শান্তিতে নেই, পরিবর্তন চায়: এরশাদ by রিয়াদুল করিম

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, হত্যা-গুম, দুর্নীতি বাড়ছে। বাড়ছে সবকিছুর দাম। মানুষ ভালো নেই, তারা এ অবস্থার পরিবর্তন চায়। সে পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পার্টি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।


তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে তিস্তা অভিমুখে জাপার লংমার্চের প্রথম দিন গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন পথসভায় সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ এসব কথা বলেন। গতকাল রাতে লংমার্চ রংপুরে পৌঁছেছে। আজ বুধবার তিস্তা ব্যারাজের কাছে হেলিপ্যাড ময়দানে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে লংমার্চ।
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি না হওয়ার জন্য বিগত সময়ে ক্ষমতায় থাকা বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে পানি বণ্টন চুক্তি হবে।
গতকাল সকাল নয়টায় দলের বনানী কার্যালয় থেকে কয়েক শ গাড়ি নিয়ে শুরু হয় লংমার্চ। পরে রাস্তায় বিভিন্ন পথসভা থেকে আরও কিছু গাড়ি বহরে যোগ দেয়। যাত্রাপথে আশুলিয়া, বিকেএসপি, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও এলেঙ্গা, সিরাজগঞ্জের এরিস্টোক্র্যাট হোটেল প্রাঙ্গণ, বগুড়ার শেরপুর, মাঝিড়া, মহাস্থানগড় ও মোকামতলা, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ী এবং রংপুরের পীরগঞ্জ ও মিঠাপুকুরে পথসভায় এরশাদ বক্তব্য দেন।
প্রতিটি পথসভায় এরশাদ আরেকবার ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আবেদন জানান। তিনি বলেন, ‘আমাকে কি আরেকবার সুযোগ দেবেন? আরেকবার সুযোগ দিলে শান্তি ফিরিয়ে আনব। ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতিমুক্ত নতুন একটি দেশ উপহার দেব।’
মহাজোট সরকারের অন্যতম শরিক এরশাদ বলেন, আগামীতে জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে এবং সময়মতো মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা আসবে। তিনি বিভিন্ন পথসভায় পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশকে কিছুই দিতে পারেনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘দুটি সরকারই দেখেছেন। কী পেয়েছেন, বুকে হাত রেখে প্রশ্ন করুন। কোনো উত্তর পাবেন না।’
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর বাজারে দ্বিতীয় পথসভায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, ‘তিস্তার বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে হলে সবাইকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আমাদের নেতারা একে অন্যের সঙ্গে বসতে পারেন না। তাই এই দায়িত্ব জাতীয় পার্টি নিয়েছে।’
ভারত সরকারের উদ্দেশে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমরা গরিব দেশ। আমাদের ওপর অন্যায়-অবিচার করবেন না। আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। তাহলেই আমরা বন্ধু থাকব।’
নিজের জনপ্রিয়তা বাড়ছে দাবি করে এরশাদ বলেন, জেলে যাওয়ার আগে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল ১২ শতাংশ, জেল থেকে বের হওয়ার পর তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ শতাংশে। আর এখন তাঁর জনপ্রিয়তা ৩০ শতাংশ।
লংমার্চে জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর আহমদ, কাজী ফিরোজ রশীদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন।

No comments

Powered by Blogger.