মাঝিনা-ত্রিমোহনী সড়ক-দুর্নীতিজটে যোগাযোগ ব্যবস্থা

মাঝিনা-কায়েতপাড়া-ত্রিমোহনী সড়কপথটির নির্মাণ ছয় বছরেও শেষ করা যায়নি। অথচ যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আওতাধীন প্রকল্পটির পূর্ত কাজে ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা খরচ করে ১৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে এক তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সমকালে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক রিপোর্টে এহেন পুকুরচুরিতে প্রকল্প পরিচালক জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়েছে।


৮ কিলোমিটারের সড়ক প্রকল্পটি মূলত যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ সড়কের যানজট কমানোর শুভ উদ্দেশ্য নিয়েই প্রণয়ন করা হয়েছিল। ২০০৪ সালে গৃহীত সড়কটি নির্মাণ দুর্নীতির কবলে না পড়লে আরও আগেই সম্পন্ন হতে পারত। তবে প্রকল্প পরিচালককে দুর্নীতির জন্য সরাসরি দায়ী করা হলেও তিনি নিশ্চয়ই এ ধরনের জনস্বার্থবিরোধী, নৈতিকতাবর্জিত, প্রকল্পের অর্থ নয়ছয়কারী কর্মকাণ্ডে একা জড়িত ছিলেন না। আইএমইডির প্রতিবেদনে সুস্পষ্টভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকার পরও পুনরায় ওই ঘটনা নিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আন্তঃবিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা হলো কীভাবে? আসলে তদন্তকে দীর্ঘায়িত করার একটা কুমলব এখানে দৃশ্যমান। প্রধানমন্ত্রীর গোচরীভূত হওয়া এবং প্রকল্পটি সরাসরি জনস্বার্থ সম্পর্কিত হওয়ার পরও এটি নিয়ে এখনও কীভাবে টালবাহানা চলতে পারে তা বোধগম্য নয়। গৃহীত প্রকল্পটি ৩ বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০০৭ সালের মধ্যেই সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল। নগরীর ব্যস্ততম যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ এড়িয়ে রাজধানীতে সিলেটের গাড়িগুলো প্রবেশের বিকল্প পথ তৈরি করাই ছিল ২৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প গ্রহণের উদ্দেশ্য। কিন্তু প্রকল্পটি যথাসময়ে দুর্নীতির কারণে শেষ করা যায়নি বলে এখন এটির ব্যয় অনেকগুণ বেড়ে যাবে। ফলে দুর্নীতির মাধ্যমে যেমন সরকারি কোষাগারের অনেকগুলো টাকা বেরিয়ে গেল আবার সময় বৃদ্ধি হেতু ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে বাড়তি অর্থও আবার সরকারকেই গচ্চা দিতে হবে। আমরা মাঝিনা-কায়েতপাড়া-ত্রিমোহনী সড়ক প্রকল্পের দুর্নীতি তদন্তে গঠিত আন্তঃবিভাগীয় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অবিলম্বে সম্পন্ন করে জমা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাই। ইতিপূর্বে আইএমইডি প্রণীত রিপোর্টটিও এর সঙ্গে যুক্ত করে দেখা হোক। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ মিলবে তাদের কঠোর শাস্তি বিধান করা হোক। তবে প্রকল্পটি যেহেতু জনগুরুত্বসম্পন্ন তাই তদন্ত রিপোর্টের জন্য এর বাস্তবায়ন কাজ আর বিলম্বিত করা উচিত নয়।

No comments

Powered by Blogger.