টেস্ট দলে ফিরলেন আশরাফুল ও নাজিমউদ্দিন এই প্রথম

তিন ওয়ানডেতেই ১৪ জনকে খেলিয়ে ফেলেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্টের জন্য গতকাল ঘোষিত ১৫ জনের স্কোয়াডেও পরিবর্তনের জোয়ার! অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের টেস্ট স্কোয়াডের তিনজন নেই বর্তমান দলে। খেলোয়াড় সংখ্যা বাড়ালে বাদ পড়ার সংখ্যাটা চার হতো। তো এ পরিবর্তনের স্রোতে প্রথমবার টেস্ট দলে ডাক পেলেন নাজিমউদ্দিন। তবে যথারীতি দল ঘোষণার প্রধান আকর্ষণ মোহাম্মদ আশরাফুল।


এক সিরিজ পরই আবারও তাঁর শরণাপন্ন জাতীয় নির্বাচক কমিটি।\মাঠে দল খারাপ করছে। যা বদলে দিতে প্রতি ম্যাচে একাদশ পরিবর্তন করেও সুফল পায়নি বাংলাদেশ দল। বরং টিম ম্যানেজমেন্টের ছটফটানিই ক্রিকেট আড্ডার আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এ অবস্থায় টেস্ট দলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পরিবর্তনকে মোটেও অস্থিরতা বলে মনে করছেন না প্রধান নির্বাচক আকরাম খান, 'মাঠে ক্রিকেটটা খেলতে হবে ক্রিকেটারদেরই। সে কারণেই পরিবর্তন করতে হয়েছে। আর খুব বেশি পরিবর্তনও তো করা হয়নি।' বলে প্রতিটি পরিবর্তনের পক্ষে নিজের যুক্তি তুলে ধরেছেন জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক, 'ইনজুরির কারণে ইমরুল কায়েস এমনিতেই খেলতে পারত না। তা ছাড়া ফর্মও ভালো যাচ্ছে না ওর। মিডল অর্ডারে রকিবুল (হাসান) দক্ষিণ আফ্রিকায় 'এ' দলের হয়ে মোটেও ভালো খেলেনি। জাতীয় লিগেও রান নেই। শুভাগতও ব্যর্থ।'
ব্যর্থতার এ 'ব্যর্থ'তা দল থেকে দূর করতে আকরাম খানের কমিটি যাঁদের দলে নিয়েছে, তাঁদের অতীতের দিকে তাকিয়েও খুব আশাবাদী হওয়ার উপায় নেই। ২০০৭ সালে টি-২০ দিয়ে শুরু নাজিমউদ্দিনের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থমকে পড়ে পরের বছরই। তবে এবারের জাতীয় লিগে একটি সেঞ্চুরি এবং চারটি ফিফটি করা চট্টগ্রামের এ ব্যাটসম্যানকে টপ অর্ডার সমস্যার বিকল্প হিসেবে দলভুক্ত করেছেন নির্বাচকরা। এদিকে আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করা আশরাফুলকে পরের টেস্ট সিরিজেই বাদ দিয়েছিলেন আকরাম খান। যুক্তি ছিল, ফর্মে নেই সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেকে টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান। আবার এক সিরিজ পরই সেই আশরাফুলে ফিরে যাওয়ার পক্ষে আকরাম খানের যুক্তি, 'জাতীয় লিগের শেষ তিনটি ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি আর দুইটি ফিফটি করেছে আশরাফুল। রানে আছে। তা ছাড়া মিডল অর্ডারে ওর চেয়ে ভালো অবস্থায় কেউ নেই।' পাকিস্তান সিরিজে বাংলাদেশ দলই তো ভালো নেই!
জাতীয় লিগের ম্যাচ ফেলে গতকাল চট্টগ্রামগামী ফ্লাইট ধরার আগে অবশ্য টি-২০ এবং ওয়ানডে সিরিজে জাতীয় দলের ব্যর্থতার গ্লানি গায়ে মাখতে চাচ্ছেন না আশরাফুল, 'ওসব নিয়ে ভাবছি না। অক্টোবরে বাদ পড়ার পরই ঠিক করেছিলাম যে এরপর জাতীয় দলে ফিরলে বড় খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করব।' ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে বাদ পড়ার পর তিনি নেমে পড়েন জাতীয় লিগে। প্রথম ম্যাচে একটি ফিফটি করলেও পরের দুই ম্যাচে ব্যর্থ ব্যাটসম্যান আশরাফুল। এরপর ব্যাটিং পজিশন বদলে ওপেনারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তিনি। এবারের জাতীয় লিগে আশরাফুলের একমাত্র সেঞ্চুরিটিও ইনিংসের শুরুতে নেমে করা। তাই বলে পাকিস্তানের বিপক্ষে আশরাফুলকে তামিম ইকবালের সঙ্গী করার চিন্তা নেই আকরাম খানের, 'না, ও (আশরাফুল) মিডল অর্ডারেই খেলবে।' ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাটিং অর্ডার বদলেছেন বটে, তবে টেস্টে মিডল অর্ডারই আশরাফুলের বরাবরের পছন্দ। আগামীকাল চট্টগ্রামে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের প্রথম টেস্টে চার নম্বরেই দেখা যাবে এ ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি, ৫৬ ম্যাচ খেলা আশরাফুলকে।

টেস্ট স্কোয়াড
মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), মাহমুদ উল্লাহ, তামিম ইকবাল, শাহরিয়ার নাফীস, মোহাম্মদ আশরাফুল, নাঈম ইসলাম, সাকিব আল হাসান, নাসির হোসেন, রুবেল হোসেন, নাজমুল হোসেন, মোহাম্মদ ইলিয়াস, শাহাদাত হোসেন, মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী, রবিউল ইসলাম ও নাজিমউদ্দিন।

No comments

Powered by Blogger.