আরব লিগ থেকে সিরিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার

আরব লিগ গতকাল শনিবার সিরিয়াকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে। এতে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ আরব লিগের প্রস্তাব বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত সিরিয়া এই জোটের কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না। এ ছাড়া দেশটির ওপর অবরোধ আরোপেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংসতা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে আরব লিগ।
তবে সিরিয়ার কূটনীতিক ইউসেফ আহমেদ এ পদক্ষেপকে অবৈধ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, দামেস্ক এরই মধ্যে ওই প্রস্তাব বাস্তবায়ন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আদেশে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আরব লিগ যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে দাবি করে ইউসেফ আহমেদ বলেন, তারা লিবিয়ার মতো সিরিয়ায় বিদেশি আগ্রাসন চালানোর উৎসাহ দিচ্ছে।
মিসরের রাজধানী কায়রোতে জরুরি বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হামাদ বিন জসিম আল-থানি বলেন, আরব লিগের বৈঠকে সিরীয় প্রতিনিধিদের কর্মকাণ্ড স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দামেস্কের ওপর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত ২ নভেম্বর দামেস্ক যে আরব শান্তি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল, এর পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে।
সিরিয়াকে বহিষ্কার করা ছাড়াও বিবৃতিতে দামেস্ক থেকে আরব দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করার আহ্বান জানানো হয়। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য সংশ্লিষ্ট সদস্যদেশগুলোর ওপরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
শেখ হামাদ বলেন, আগামী বুধবার থেকে এসব পদক্ষেপ কার্যকর হবে। এ ছাড়া সুনির্দিষ্ট বিষয়ে অবরোধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আরব দেশগুলোর মন্ত্রীরা আবার বৈঠকে বসবেন।
বিবৃতিতে সিরিয়ার বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার আহ্বান জানানো হয় এবং সেখানে রক্তপাত অব্যাহত থাকলে আরব লিগের মহাসচিব নাবিল আল-আরাবি জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করবে বলেও জানানো হয়েছে।
কয়েক দিন ধরেই সিরিয়ার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা সিরিয়ার সদস্যপদ স্থগিত করতে আরব লিগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিল। গতকালের বৈঠকে সিরিয়াকে বহিষ্কারসংক্রান্ত ওই প্রস্তাবের পক্ষে আরব লিগের ১৮ সদস্যদেশ ভোট দেয়। আর বিপক্ষে পড়ে তিন ভোট। এ ছাড়া এক সদস্যদেশ ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকে।
গত ২ নভেম্বরের শান্তি প্রস্তাবের আওতায় বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে দমন অভিযান বন্ধ করা, মোতায়েনকৃত ট্যাংকগুলো সরিয়ে নেওয়া, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়া এবং সংঘাত বন্ধের উপায় নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপের বিষয়ে একমত হয় সিরিয়ার সরকার।
এদিকে গত শুক্রবার সিরিয়ায় সহিংসতায় কমপক্ষে ২৩ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, সর্বশেষ সহিংসতায় হোমসে ১৫ জন মানুষ নিহত হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.