‘হ্যাটট্রিক হিরো’র চাওয়া দলের জয়

ভারতীয়রা যখন পুড়ছে স্টুয়ার্ট ব্রডের আগুনে, সোয়ানসিতে তখন কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচে নটিংহ্যামশায়ার খেলছে গ্ল্যামরগনের বিপক্ষে। ভাগ্যটা সহায় না হলে হয়তো ট্রেন্টব্রিজে নয়, ৩০ জুলাই বিকেলে ব্রড হয়তো থাকতেন সোয়ানসিতে!
এই সিরিজের আগে ১১ ইনিংসে ছিল ১১ উইকেট। পরিসংখ্যানের চেয়েও বাজে ছিল তাঁর শরীরী ভাষা। এই সিরিজের দল থেকে হয়তো বাদই পড়ে যেতেন। বাঁচিয়ে দিয়েছে সিরিজ শুরুর ঠিক আগে সমারসেটের বিপক্ষে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচে পাওয়া ৫ উইকেট। লর্ডসের একাদশে থাকা নিয়েও ছিল সংশয়। ম্যাচ শুরুর সকালে সিদ্ধান্ত হয় আরেকটা সুযোগ দেওয়ার। সেই ব্রডই এখন ইংল্যান্ডের ত্রাতা।
লর্ডসের প্রথম ইনিংসটা বাদ দিয়ে পুরো সিরিজটাই বলতে গেলে ব্রডময়। লর্ডসের দ্বিতীয় ইনিংসে মহা গুরুত্বপূর্ণ ৭৪ রান, দুই ইনিংসে ৭ উইকেট। চলতি টেস্টে ইংল্যান্ডের মুমূর্ষু ইনিংসকে তরতাজা করেছে প্রথম ইনিংসে তাঁর ৬৪ রান। পরশু নাম লেখালেন ইতিহাসেই। ইতিহাসের ৩৯তম, ইংল্যান্ডের দ্বাদশ আর ভারতের বিপক্ষে প্রথম হ্যাটট্রিক দেখল টেস্ট ক্রিকেট। টেস্ট অভিষেকের ১১২ বছর পর ট্রেন্টব্রিজ হ্যাটট্রিকের মুখ দেখল নটিংহ্যামের এক সন্তানের সৌজন্যেই! টেস্ট (৬/৪৬) এবং ওয়ানডে (৫/২৩), দুটিতেই ব্রডের সেরা বোলিং এখন ঘরের মাঠে!
ঘরের মাঠে এমন কীর্তি গড়ে তৃপ্ত ব্রড, ‘হ্যাটট্রিকের অনুভূতি সব সময়ই দারুণ, তবে ট্রেন্টব্রিজে পাওয়াটাকে মনে হচ্ছে বিশেষ কিছু। দর্শক সমর্থন ছিল অসাধারণ। তারা বুঝতে পেরেছিল দ্বিতীয় নতুন বলটা ছিল দলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দারুণ অনুপ্রাণিত করেছে তারা, ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের জন্য সৃষ্টি করেছিল ভীতিকর পরিবেশ।’
১৬ বলের মধ্যে কোনো রান না দিয়ে ৫ উইকেট নিয়ে পরশু বিকেলে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন একাই। তবে এখনই উচ্ছ্বাসে ভেসে যাচ্ছেন না। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন সবচেয়ে বড় চাওয়া দলের জয়, ‘দুটো ম্যাচই আমার জন্য ছিল দারুণ উপভোগ্য, তবে দল না জিতলে এসবের কোনো অর্থই নেই। আমরা এখানে টেস্ট জিততে এসেছি, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের মূল্য সামান্যই।’

No comments

Powered by Blogger.