লাদেনের ওই বাড়িতে মাত্র একজন অস্ত্রধারী ছিলেন

আল-কায়েদার শীর্ষনেতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পর থেকে ওই অভিযান নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তথ্য দিয়ে যাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। এবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা জানান, ওসামাকে হত্যার অভিযানে নিহত অন্য চারজনের মধ্যে মাত্র একজন ব্যক্তি অস্ত্রধারী ছিলেন। তিনি মার্কিন কমান্ডোদের লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়েন। পরে কমান্ডোদের পাল্টা গুলিতে তিনি মারা যান। অস্ত্রধারী ওই একমাত্র ব্যক্তি হলেন ওসামার বার্তাবাহক আবু আহমেদ আল কুয়েতি।
গত বৃহস্পতিবার এসব তথ্য দিতে গিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, এমন তথ্য দেওয়ার যথাযথ কর্তৃপক্ষ তিনি নন। তাই নাম প্রকাশ করতে চান না। তিনি বলেন, ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ওসামাকে হত্যার অভিযানের বস্তুনিষ্ঠ বর্ণনা প্রকাশ করা উচিত। ওসামাকে খুঁজতে ওই বাড়ির একতলা থেকে অন্য তলায় যাওয়া, তাঁর সহযোগীদের প্রতিরোধ ও তাঁকে হত্যার বর্ণনা দেওয়া উচিত।
মার্কিন ওই কর্মকর্তা জানান, ওসামার বার্তাবাহক আবু আহমেদ অ্যাবোটাবাদের বাড়িটির অতিথি কক্ষে ছিলেন। মার্কিন কমান্ডোরা বাড়ির চত্বরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে আবু আহমেদ তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। কমান্ডোদের পাল্টা গুলিতে আবু আহমেদ মারা যান। তাঁর সঙ্গে একজন নারীও নিহত হন। ওই কর্মকর্তা জানান, আবু আহমেদের সঙ্গে কমান্ডোদের গুলিবিনিময়ের সময় ক্রসফায়ারে ওই নারী নিহত হন।
মার্কিন ওই কর্মকর্তা দাবি করেন, বাধা পাওয়ার আগে কমান্ডোরা কখনোই গুলি ছোড়েনি। ওসামার কক্ষে পৌঁছার আগে বাড়িটির দ্বিতীয় তলায় এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেন কমান্ডোরা। এরপর তাঁরা ওপরে ওঠার সিঁড়িতে ওসামার এক ছেলেকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, কমান্ডোরা ওসামার কক্ষে পৌঁছালে তিনি অস্ত্র নেওয়ার জন্য চিৎকার দেন। এর পরপর তাঁকে গুলি করা হয়।
ওসামাকে হত্যার পর থেকে হোয়াইট হাউস, মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ ও মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তথ্য দিয়ে আসছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে তা হলো, কমান্ডোদের সঙ্গে ওসামা ও তাঁর সহযোগীদের প্রায় ৪০ মিনিট গুলিবিনিময় চলে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জে কার্নে গত মঙ্গলবার বলেন, অভিযানের সময় ওই বাড়িতে অনেক অস্ত্রধারী ব্যক্তি ছিলেন। এর আগে সোমবার প্রতিরক্ষা বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, অভিযানের বেশির ভাগ সময়ই দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলিবিনিময় চলে।
তবে পরে এসব তথ্য সংশোধন করে মার্কিন প্রশাসন। হোয়াইট হাউসের সন্ত্রাসবাদবিরোধী উপদেষ্টা জন ব্রেননান বলেন, ওসামা নিরস্ত্র ছিলেন। তবে তাঁর কক্ষে অনেক আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়।
মার্কিন প্রশাসন জানায়, অভিযানে ওসামা, তাঁর এক ছেলে, বার্তাবাহক আবু আহমেদ, আবু আহমেদের এক ভাই ও একজন নারী নিহত হন।

No comments

Powered by Blogger.