গল্পসল্প- 'মুজিব একবার আসিয়া সোনার বাংলা যাওরে দেখিয়ারে' by মোস্তফা হোসেইন

শাহ মোঃ মোজাম্মেল হোসাইন মুরাদ। পিতা- মৌঃ রেয়াছত আলী ফকির। মা- সরফুলের নেছা। গ্রাম- বাড়ানী (মজুমদার বাড়ি)। ব্রাহ্মণপাড়া, কুমিল্লা। দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলেন ১৯৭১ সালে। পড়তেন চান্দলা কে বি হাই স্কুলে। বেশ চটপটে ছিলেন।

গ্রামের এবং ধর্মসচেতন পরিবারে জন্ম নেয়ার পরও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ছিল নিবীড় সম্পর্ক। সত্তরের নির্বাচনের আগে কিশোর কণ্ঠে গাইতেন নজরুল-রবীন্দ নাথের দেশাত্দবোধক গান। বিশেষ করে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট আমির হোসেনের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে মুরাদের সঙ্গীত পরিবেশন ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। সেভাবেই রাজনীতি মনস্ক হয়ে ওঠেন সে সময়ের কিশোর মুরাদ।
তারপর নির্বাচন হলো। এলো ৭ মার্চ। ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে গেল বাংলাদেশে। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ প্রচারের পর সব চিন্তা-চেতনায় নাড়া দেয় মুরাদের।
২৫ মার্চের গণহত্যার পর হাজার হাজার মানুষ ভারতমুখী হয়। সীমান্ত এলাকার নিকটবর্তী গ্রামে বাড়ি হওয়ার কারণে মুরাদ সেই সময়ের শরণার্থীদের মিছিল দেখার সুযোগ পেয়েছেন। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে শরণার্থীদের সেবা করেছেন। বিশেষ
করে রাস্তার পাশে বাড়ি হওয়ার কারণে সেই মিছিল দেখে নিজের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তার মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বুঝতে অসুবিধা হয় না, তাকেও বাড়ি ছাড়তে হবে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা এসব শরণার্থীরই মতো। কিন্তু মুজিবের সেই ঘোষণা যার যা আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান তাকে উজ্জীবিত করে। তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন কখন সুযোগ আসবে।
অবশেষে সেই সুযোগ আসে। মা-বাবা সরাসরি আপত্তি জানানোর পরও তাদের তিনি রাজি করাতে সক্ষম হন। বিশেষ করে তিনি জানান, ছাত্রলীগ করার কারণে তার বাড়ি পাকিস্তানিরা পুড়িয়ে দেবে। আর দেশে পেলে মেরেও ফেলবে। এমতাবস্থায় প্রতিরোধ করে আত্দরক্ষার ব্যবস্থা করাই উত্তম।
এসব কথা শোনার পর তারা সম্মতি দিলেন মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়ার জন্য। ৩০ মে ১৯৭১ সালে মোজাম্মেল হোসাইন বাড়ি ছেড়ে রওনা হন ভারতের উদ্দেশে। কয়েক ঘণ্টা হেঁটে পেঁৗছান বক্সনগর। ওই রাতে সেখানে শরণার্থী ক্যাম্পে কাটিয়ে দেন শরণার্থীদের সঙ্গে। পরদিন যান আগরতলা কংগ্রেস হাউসে।
ওখানে আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আবদুল কাফি ও এমপিএ অ্যাডভোকেট আমীর হোসেন সাহেবের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের সুপারিশ নিয়ে সঙ্গী আট-দশ জনকে নিয়ে হাফানিয়া মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে ভর্তি হলেন। তখনো পরিপূর্ণ হয়নি ক্যাম্পটি। ফলে সেখানে ক্যাম্প তৈরির কাজে লাগানো হয় তাদের। ওই সময়টা ছিল দুর্বিষহ। কারণ তাদের ধৈর্যহারা হওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছিল। তারা প্রতিনিয়ত মনে করতেন, যুদ্ধে যেতে হলে দেরি না করে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। তারপর তো দেশে গিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া যাবে।
ক্যাম্পে আবদুল মতিন সাহেব ছিলেন বাঙালি অফিসার। তার মাধ্যমেই বাছাই করা হয় তাকে। ৪ জুলাই রাতের বেলা তাদের গাড়িতে ওঠানো হয়। গাড়ি চলতে থাকে পাহাড়ি পথে। উঁচুনিচু পথ ধরে গাড়ি চলছে তো চলছে। কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তার কিছু্ই জানেন না তার মতো অন্যরাও। তবে তাদের মনে ছিল অনন্য উৎসাহ। কারণ সেখানে গেলে তারা প্রশিক্ষণ পাবেন। সেই প্রশিক্ষণ নিতে পারলেই তো সম্ভব হবে যুদ্ধে যাওয়া। সারারাত গাড়ি চলেছে। সকালে জানতে পারেন জায়গার নাম বাঘমারা।
বাঘমারা প্রশিক্ষণ কেন্দে এক মাস অবস্থান করেন তারা। সেখানে ৩৩ জন করে একেকটি গ্রুপকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। মোজাম্মেল হোসাইনের গ্রুপকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন ক্যাপ্টেন এ এইচ ললিংগা লুসাই। সেখানে ৩৬ হ্যান্ড গ্রেনেড, থ্রি নট থ্রি, মার্ক-৪, এসএলআর, এসএমজি, এলএমজি, টুইনস মর্টার, এক্সপ্লোসিভ সেপটি ফিউজ, ডেটোনেটর পিকে ওয়াল ব্রিজ ধ্বংস করার কৌশল ইত্যাদি পরিচালনার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ৩০ জুলাই তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়।
১ আগস্ট রাতের বেলা তাদের স্থানান্তর করা হয় হেড কোয়ার্টারে। প্রচণ্ড উত্তেজনা তখন মনে। কারণ এখানেই অবস্থান করছেন ২ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর হায়দার। এখানে অবস্থান করে বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে ডিফেন্স ফাইটে যোগ দিতে হয় তাদের। প্রায় দেড় মাস তাদের সেখানে থাকতে হয়। ওই সময় তাদের যেতে হয়েছে শালদানদী, শষিদল, মতিনগর, বিবিরবাজার প্রভৃতি এলাকায় সীমান্ত এলাকায় মিত্রবাহিনী এবং মুক্তিযোদ্ধার নিয়মিত বাহিনীর সঙ্গে থেকে শত্রুবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য। তখন অধিকাংশ সময়ই সুবাদার আফজাল খানের অধিনায়ক হিসেবে তাদের পরিচালনা করেছেন।
মেলাগড়ে মাঝে মাঝে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। সেক্টর কমান্ডার হায়দার সাহেব নিজে উপস্থিত থাকতেন সেসব অনুষ্ঠানে। এমনি এক অনুষ্ঠানে 'মুজিব একবার আসিয়া সোনার বাংলা যাওরে দেখিয়ারে' গান গেয়ে মোজাম্মেল হোসাইন সেক্টর কমান্ডারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন।
পুরস্কার হিসেবে তিনি কমান্ডারের কাছ থেকে কিছু টাকা পেয়েছিলেন।
খুব সম্ভবত ১৫ সেপ্টেম্বর বৃহত্তর বুড়িচং থানা এলাকায় গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য তাদের প্রেরণ করা হয়। তাদের অধিনায়ক হিসেবে নিয়োজিত করা হয় সুবাদার আফজাল খানকে। গভীর রাতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তাদের ঢুকতে হবে দেশের অভ্যন্তরে। স্থান নির্ধারণ করা হয় রাজাপুর স্টেশনের দক্ষিণ দিকে সম্ভাব্য নিরাপদ এলাকাকে। খুবই সতর্কতার সঙ্গে তাদের রেললাইন পাড়ি দিতে হয়। ভোর রাতের দিকে তারা পারি দিয়ে গিয়ে পেঁৗছান নানুয়া বাজারে। তারপর কিছু চিড়া-মুড়ি নিয়ে তারা রওনা হন বাজেউড়া গ্রামের দিকে। সেখানে ইদ্রিস ভূঞার বাড়ি ও তার পূর্বদিকের এক বাড়িতে তারা আশ্রয় নিলেন।
নিরাপদ আশ্রয় খোঁজাও চলতে থাকে একসঙ্গে। কর্মসূচি স্থির করা হয়। বলা হয়, প্রথম কিছু রাজাকার ধরে আনতে হবে। তারপর তাদের কাছ থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
পরবর্তীকালে প্লাটুনে বিভক্ত করা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের। মোজাম্মেল হোসাইনদের প্লাটুনের অধিনায়ক নিযুক্ত হন মুক্তিযোদ্ধা আলী আহাম্মদ সাহেব। যিনি পরবর্তীকালে সিদলাই আশরাফ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিলেন।
অপারেশন চালানোর সিদ্ধান্ত হয় অলুয়া ও রামনগরে। দু'দিনে দীর্ঘসময় ধরে যুদ্ধ চলে সেখানে। শত্রু বাহিনীর বেশ কিছু সৈন্য নিহত হয় সেই যুদ্ধে। ক্লান্তি আর অবসাদ নিয়ে মোজাম্মেলদের প্লাটুনটি আশ্রয় নেয় জিরুইন ইসমাইল ভূঞার বাড়িতে।
সেখানে থাকাকালে জিরুইন আক্রমণ করতে আসে পাকিস্তানি বাহিনী। বড় ভাঙ্গাইন্যা নামক স্থানে প্রচণ্ড প্রতিরোধের মুখে পড়ে পাকিস্তানি বাহিনী। ১০৫ জন সৈন্যের এই বাহিনীর অধিকাংশই নিহত হয় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে। জীবিতদের কিছু পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু তখনো তাদের প্রধান ঘাঁটি বুড়িচং থেকে উৎখাত করা যায়নি। সেখানেই চলে যায় জীবিতরা।
ওই মুহূর্তে মোজাম্মেলদের গ্রুপটি পিছু হটে রাস্তায় ওদের আক্রমণ করে বসে। কিন্তু আক্রান্তদের কয়েকজন মাত্র সেখান থেকে বেঁচে যেতে পারে। কিন্তু সেখানে ব্যাপকতর আর্টিলারি শেলিং হওয়ার কারণে তাদের পক্ষে জিরুইন গ্রামে থাকা সম্ভব হচ্ছিল না।
এমতাবস্থায় তারা পিছু হটে বেজোরা গ্রামে তজু ভূঞার বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেন। নিরাপদে ফিরে আসার জন্য তাদের যথেষ্ট কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। ওই সময় মাঠে ছিল পরিপূর্ণ আমন ধান। পানি ছিল কোথাও সাঁতার কাটার মতো। কোথাও আবার বুক পানি। এই পানি মাড়িয়ে তাদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে গভীর রাতে। গায়ে ধানগাছ লেগে চামড়া কেটে গেছে সবারই। কিন্তু তারপরও হাতের অস্ত্রশস্ত্র হেফাজত করতে কার্পণ্য করেননি তারা মোটেও। স্থানীয় লোকজন সবাই সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসেন। কিন্তু এত মানুষের খাবারদাবার তৈরি করা তো আর সহজ ব্যাপার নয়।
বিভিন্ন ঘর থেকে চাল-ডাল জোগাড় করে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার তৈরি করতে শুরু করেন। কিন্তু খাবার তৈরি হতে হতে রাত শেষ হয়ে যায়। ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার খেতে হয় প্রায় দু'দিন বাদে।
ওই সময় মোজাম্মেল জানতে পারেন কাছাকাছি এক গ্রামে তার মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছেন। কারণ অনেক আগেই পাকিস্তানি বাহিনী তাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং সেখানে বাংকার বানিয়ে চান্দলা দখল করার চেষ্টা করেছে। বড়শালঘর এলাকায় তার বাবা-মা থাকলেও তিনি সেখানে যেতে পারবেন বলে মনে হয় না। তারপরও তিনি কমান্ডারের কাছে ছুটি চাইলেন যাতে তাকে অন্তত একদিনের জন্য ছুটি দেয়া হয়। কিন্তু কমান্ডার বললেন, বড়শালঘর পাকিস্তানি বাহিনীর আওতাধীন এলাকা। সেটা মুক্ত এলাকা না হওয়ার কারণে তার পক্ষে ওখানে যাওয়াটা মোটেও নিরাপদ নয়। শেষ পর্যন্ত সহযোদ্ধাদের অনুরোধে কমান্ডার তাকে সেখানে যেতে অনুমতি প্রদান করেন।
অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি হবে সময়টা। দুপুর বেলা বড়শালঘর সামসুজ্জামান সাহেবের বাড়িতে পেঁৗছেন মোজাম্মেল হোসাইন। তাকে কাছে পেয়ে মোজাম্মেলের মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ কান্না ছিল একান্তই সুখের কান্না। কারণ তার আগে মা ও বাবা মনে করেছিলেন যুদ্ধ করতে করতে তাদের ছেলে মৃত্যুবরণ করেছেন। এমন অবস্থায় মোজাম্মেলও কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানতে পারেন বাড়ির অবস্থা এবং নিকটাত্দীয়দেরও খবরাখবর। খাওয়া-দাওয়া করার সময় সেই বাড়িতে এসে হাজির হয় একদল রাজাকার।
ধরা পড়ে যান মোজাম্মেল। হাজারো প্রশ্ন চলে মোজাম্মেলকে নিয়ে এবং সরাসরি মোজাম্মেলকে। ওই এলাকা ছিল মুসলিম লীগ অধ্যুষিত এবং এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো যাতায়াত ছিল না। রাজাকাররা তাই সন্দেহ করে, মোজাম্মেল নিশ্চিত মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ হবে।
আসলে সে এখানে এসেছে রাজাকারদের খবর নেয়ার জন্য। যার মানে, তার মাধ্যমেই এই গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের দল আসবে এবং তারা রাজাকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এমন সন্দেহ থেকে তারা মোজাম্মেলকে বলে তাদের সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জ সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে যাওয়ার জন্য। তখন পুরো বাড়ির মানুষ মোজাম্মেলের জামিন হয়। বলে মোজাম্মেল কোনো মুক্তিযোদ্ধা নয়। কিন্তু সামসু, তাজু ও মুজিবর রহমান তিন রাজাকারকে ওই বাড়িতে রেখে যায় বাকি রাজাকাররা।
মুজিবর রাজাকার একসময় মোজাম্মেলকে বলে, সে যেন দ্রুত বাড়ি ত্যাগ করে। তা নাহলে রাতের বেলা এসে তাকে নিয়ে যাবে রাজাকাররা। আর রাজাকাররা তাকে এখান থেকে নিয়ে গেলে আর তিনি কোনো দিনও ফিরে আসতে পারবেন না।
এমন সময় মোজাম্মেলের বাবা তাকে নিয়ে পূর্বদিকে দ্রুত হাঁটতে থাকেন।
এগারোগ্রাম নামক স্থানে আসার পর দেখা যায় একদল মুক্তিযোদ্ধা পশ্চিম দিকে এগিয়ে আসছে। তাদের দেখে যেন তারা প্রাণ ফিরে পান। মোজাম্মেলের বাবা বসে পড়েন রাস্তার মাঝখানে। মোজাম্মেল বলেন আগতরা তারই গ্রুপের। সেখানে তারও কমান্ডার রয়েছেন।
তখন তিনি জানতে পারেন, তার কমান্ডারের কাছে কে গিয়ে বলেছে, মোজাম্মেল পাকিস্তানি বাহিনীর তাঁবেদার রাজাকারদের হাতে ধরা পড়েছে। সে কারণেই তারা বড়শালঘর আক্রমণ করার জন্য এগিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু মোজাম্মেলকে ফিরে আসতে দেখে কমান্ডার তার দল নিয়ে পিছু হটেন এবং বেড়াখোলা গ্রামে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেন। (দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মোজাম্মেল সেই মুজিবর রাজাকারের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। তাকে আত্দসমর্পণ করানোর ব্যবস্থা করেন। যদিও অন্য রাজাকারদের উপযুক্ত শাস্তি বিধান করেছিল মুক্তিযোদ্ধারা।)
ডিসেম্বরের শুরুতেই বুড়িচং থানার বিভিন্ন এলাকা মুক্ত হতে থাকে। তখন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গ্রামে গ্রামে অবস্থান নিতে শুরু করেছে। বুড়িচং থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাকিস্তানি সৈন্যরাও এলাকার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত ময়নামতি সেনানিবাসে গিয়ে আশ্রয় নিতে শুরু করে।
তখন স্পষ্ট হয়ে ওঠে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানিদের যে কোনো সময় পালিয়ে যেতে হবে। তাদের অবশ্যই আত্দসমর্পণ করতে হবে। তখন মোজাম্মেল হোসাইনদের গ্রুপটি সরাসরি মিত্রবাহিনীর অধিনায়কত্বে চলে আসে। একসময় পাকিস্তানি বাহিনীর পতন ঘটে। দেশ স্বাধীন হয়। ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি ক্যাপ্টেন হাসান ও হাবিলদার মোহাম্মদ আলীর হাতে মোজাম্মেল হোসাইন তার অস্ত্র সমর্পণ করেন এবং গ্রামে ফিরে এসে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন।
==================================
আন্তর্জাতিক- 'ওবামা কি ক্লিনটনের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করবেন?' by সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী  কৃষি আলোচনা- 'পোষের শেষ মাঘের বারো' by ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস  মণিপুরি মহা রাসলীলা উৎসবের ইতিকথা by মুজিবুর রহমান  প্রকৃতি- সমুদ্রে উষ্ণতা বৃদ্ধি প্রবাল মড়ক  মণিপুরি রাসমেলা উৎসব by আকমল হোসেন নিপু  যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'মডার্ন হাম্মুরাবি এবং কাঠের ঘোড়া' by আলমগীর সাত্তার  আলোচনা- 'কারাগার থেকে সংশোধনাগার প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ' by দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু  শিল্প-অর্থনীতি 'ক্ষুদ্রঋণের বিড়ম্বনা' by আহমদ রফিক  আন্তর্জাতিক- 'চীন ও দুর্লভ ধাতু নিয়ে উদ্বেগ' by পিটার কাস্টার্স  আলোচনা- 'সুশাসন-সহায়ক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো' by এ এম এম শওকত আলী  খবর ও ফিচার- 'মুক্তি পেল নীলকণ্ঠ পাখি' by শরীফ খান  প্রকৃতি- 'বাংলাদেশে জীবিকা হারানো মানুষের ‘অগত্যা বাস্তুচ্যুতি’  আলোচনা- 'প্রসঙ্গ : দুর্নীতি উৎপাটন' by মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম  ইতিহাস- পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী পরিচিতি


কালের কণ্ঠ সৌজন্যে
লেখকঃ মোস্তফা হোসেইন


এই গল্পালোচনা'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.