এদিকে ভালদেস, ওদিকে গোমেজ

ভিক্টর ভালদেসেরই জয় হলো। স্পেনের কোচ ভিসেন্তে দেল বস্ক আভাস দিয়েছেন, বিশ্বকাপের দলে রাখবেন বার্সেলোনার গোলরক্ষককে।
ভালদেস ২৯-এ পা দিয়েছেন গত জানুয়ারিতে। পেশাদার ফুটবলও খেলছেন ৮ বছর হলো। খেলেন বার্সেলোনার মতো ক্লাবে। বার্সার গত দুই মৌসুমের দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলার অন্যতম কারিগরও তিনি। সেই ভালদেসের এখনো জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলার সৌভাগ্যই হয়নি!
হবে কী করে, জন্মেছেন যে বড্ড ভুল সময়ে। বার্সার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াসের সঙ্গেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাঁর। এ মুহূর্তে বিশ্বের সেরা গোলরক্ষক ধরা হয় ক্যাসিয়াসকেই। জাতীয় দলের অধিনায়কও তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই ৪৪ বছর পর ইউরোপ-সেরার ট্রফি জিতেছে স্পেন।
ইদানীং গোলপোস্টের নিচে ক্যাসিয়াসকে মাঝেমধ্যেই নড়বড়ে দেখাচ্ছে। অন্যদিকে দুর্দান্ত ফর্মে ভালদেস। স্প্যানিশ লিগে ৩২ ম্যাচে খেয়েছেন মাত্র ১৯ গোল, বাঁচিয়েছেন ৭৮টি! ১৮টি ম্যাচে কোনো গোলই খাননি। চ্যাম্পিয়নস লিগে ১০ ম্যাচে খেয়েছেন সাত গোল, বাঁচিয়েছেন ১৩টি। স্পেনে, বিশেষ করে বার্সেলোনায় জোর দাবি উঠেছে, বিশ্বকাপের দলে রাখা হোক ভালদেসকে।
অন্য কোনো দল হলে অনায়াসে এক নম্বর জার্সিটা তিনিই পেতেন। কিন্তু স্পেন দলে ক্যাসিয়াসের পাশাপাশি বদলি দুই গোলরক্ষকের জায়গাতেও নাম নেই তাঁর। সেই জায়গা লিভারপুলের হোসে রেইনা আর ভিয়ারিয়ালের ডিয়েগো লোপেজের দখলে। ভালদেসকে দলে না নেওয়ার পেছনে কাতালান বনাম মাদ্রিদের সেই চিরকালীন দ্বন্দ্বের সূত্রও খুঁজে পায় অনেকেই।
বস্কের কাছে এখনো ক্যাসিয়াস অমূল্য সম্পদ। দুই নম্বর গোলরক্ষক হিসেবে রেইনাও। তবে লোপেজের জায়গায় ভালদেস সুযোগ পেতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন কোচ, ‘রেইনা আর ক্যাসিয়াসকে সরিয়ে দেওয়ার কোনো কারণই দেখি না। তবে লোপেজের বেলায় একই কথা বলছি না আমি, ও খেলছেও খুব কম।’
শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ দলে গেলেও হয়তো তিন নম্বর গোলরক্ষকই হতে হবে ভালদেসকে। মাঠে নামবেন কি না, সেই নিশ্চয়তা নেই। তার পরও ভালদেসের জয় দেখা হচ্ছে, কারণ তাঁকে অন্তত দলে নেওয়ার ব্যাপারে ইঙ্গিত তো দিয়েছেন দেল বস্ক। মাস দুই আগেও যেটা ভাবাই যাচ্ছিল না। যদিও বার্সা কোচ পেপ গার্দিওলার দাবি, এ মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক।
ওদিকে হিউরেলহো গোমেজের ব্যাপারেও একই মত হ্যারি রেডন্যাপের। টটেনহামের কোচ দাবি করেছেন, তাঁর এই ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষককে যেন বিশ্বকাপ দলে নেন কার্লোস দুঙ্গা, ‘গোমেজ দুর্দান্ত গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছে। আশা করি, ও বিশ্বকাপে যাবে। ব্রাজিল দলে জায়গা পাবে।’
শট ঠেকানোর দারুণ দক্ষতার কারণে ‘অক্টোপাস’ নামে পরিচিত গোমেজ এই মৌসুমে টটেনহামের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের অন্যতম কারিগর। ইন্টার মিলানের হুলিও সিজার, রোমার দোনির পাশাপাশি খুব সম্ভবত জায়গা হচ্ছে তাঁর। তবে ভালদেসের মতোই ‘তিন নম্বর ছাগলছানা’ হয়ে সাইডবেঞ্চে বসে থাকতে হতে পারে তাঁকেও!

No comments

Powered by Blogger.