বিকল্প ব্যবস্থা রেখে পর্যাপ্ত চিকিত্সাসেবা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে -ঈদে চিকিত্সক-সেবিকাশূন্য হাসপাতাল

এবারের ঈদ উত্সবের ছুটিতে বহুসংখ্যক মানুষ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন, আহত হয়েছেন অনেকে। ঢাকার বাইরে যাওয়ার সময়ের মতোই ফিরতি যাত্রায়ও তাঁদের জীবন একই রকম ঝুঁকিতে আছে। দুর্ঘটনা ছাড়াও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের শরণাপন্ন হয়েছেন অনেকে। কিন্তু ওই সময় হাসপাতালগুলোর চিত্র ছিল রীতিমতো উদ্বেগজনক। ঈদের ছুটির তিন দিনে রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলো প্রায় চিকিত্সক ও সেবিকাশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে গুরুতর অসুস্থ রোগী ও দুর্ঘটনাকবলিত ব্যক্তিদের নিদারুণ ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
বৃহস্পতিবারের প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজধানীর পঙ্গু ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটির ওই দিনগুলোতে চিকিত্সক-সেবিকার দেখা মেলা ছিল সৌভাগ্যের ব্যাপার। বেশির ভাগ চিকিত্সক-সেবিকা গেছেন উত্সবের ছুটিতে। যাঁরা আছেন, তাঁরাও কাগজে-কলমে উপস্থিত মাত্র। অনেকের চিকিত্সাসেবা ব্যাহত হয়েছে, হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় ছটফট করা ছাড়া কিছুই করার ছিল না অনেক রোগীর। চিকিত্সক-স্বল্পতায় জরুরি চিকিত্সাসেবাসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের ভোগান্তি চরমে ওঠে। জরুরি বিভাগে সীমিতসংখ্যক চিকিত্সক ও সেবিকা দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিত্সাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কেউ কেউ এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটে গেছেন, সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে। সারা দেশের পরিস্থিতিও যে এর ব্যতিক্রম নয়, তা সহজেই অনুমেয়।
চিকিত্সক ও সেবিকাদের কর্তব্যে অবহেলা বা গাফিলতির কোনো সুযোগ নেই। তাঁদের দায়িত্বশীল হতে হবে, তাঁদের পেশাগত দায়বোধ থেকে তাঁরা এ বিষয়ে আরও সংবেদনশীল ভূমিকা রাখবেন, এ আমাদের প্রত্যাশা। উত্সবের সময়ে হাসপাতালগুলোতে চিকিত্সক ও সেবিকার বিশেষ দল গঠন করে পর্যাপ্ত চিকিত্সাসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। চিকিত্সকের সংখ্যা নির্ধারণে গত কয়েক বছরের জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। জরুরি এ সেবা মানুষ সময়মতো পাচ্ছে কি না তা তদারক করা দরকার।

No comments

Powered by Blogger.