সেই শারা ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন
সিরীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ইসলামিক স্টেটের সন্দেহভাজন ৭১ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে আহমেদ শারা সিরিয়াকে পুনরায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশটি আসাদ শাসনের অধীনে বহু বছর বিচ্ছিন্ন ছিল এবং ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞে জর্জরিত। তিনি এ বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিতে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। সেখানে তিনি বলেন, সিরিয়া আবারও বিশ্বের জাতিগুলোর মধ্যে তার যথার্থ অবস্থান পুনরুদ্ধার করছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। এ সপ্তাহের শুরুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়ার ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবকে সমর্থন জানায়। এটি ওয়াশিংটনের মাসব্যাপী ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রক্রিয়ার অংশ ছিল। শুক্রবার আহমেদ শারা এবং তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস হাসান খাত্তাবের নাম যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদ-অর্থায়নে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট জানায়, সিরীয় নেতৃত্ব যে অগ্রগতি প্রদর্শন করেছে তার স্বীকৃতি হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শারা’র নাম এর আগে ‘মুহাম্মদ আল-জাওলানি’ নামে তালিকাভুক্ত ছিল। এটি ছিল তার ছদ্মনাম। তখন তিনি হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর নেতা ছিলেন। এই গোষ্ঠী ২০১৬ সাল পর্যন্ত আল-কায়েদার সহযোগী ছিল। পরে শারা তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এইচটিএস নেতৃত্বের আগে শারা ইরাকে আল-কায়েদার হয়ে যুদ্ধ করেন এবং একসময় মার্কিন বাহিনীর হাতে বন্দী ছিলেন। তার মাথার দাম ছিল এক কোটি ডলার। এ বছর শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র এইচটিএস-এর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। ট্রাম্প এর আগে মে মাসে রিয়াদ সফরের সময় শারা’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাকে বর্ণনা করেন একজন কঠিন মানুষ, অতীতে অনেক শক্তিশালী ব্যক্তি হিসেবে। তার অতীত সত্ত্বেও, শারা এমন সব সরকারের সমর্থন পেয়েছেন যারা আসাদ শাসনের বিরোধিতা করেছিল। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন একটি মধ্যপন্থী সরকার গঠনের, যা সিরিয়ার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও গোষ্ঠীর সমর্থন পেতে সক্ষম হবে।
এ বছর তিনি ঘোষণা দেন, তার নিরাপত্তা বাহিনীর যেসব সদস্য সিরিয়ার আলাওয়ি সংখ্যালঘুদের হত্যা করেছে বলে অভিযোগ আছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সুন্নি বেদুইন উপজাতি যোদ্ধা ও দ্রুজ মিলিশিয়াদের মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ দেখা দিয়েছে। এতে প্রশ্ন উঠেছে- এইচটিএস-নেতৃত্বাধীন সরকার কি সত্যিই এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারবে?

No comments