ইসরায়েল ৪৪ দিনে অন্তত ৫০০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে, হত্যা করেছে কয়েক শ ফিলিস্তিনিকে

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গত ৪৪ দিনে অন্তত ৪৯৭ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। একের পর এক হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে কয়েক শ ফিলিস্তিনিকে। গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর গত শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে।

ইসরায়েলি এসব হামলায় শিশু, নারী ও বৃদ্ধসহ ৩৪২ জন নিহত হয়েছেন।

গতকাল দপ্তরটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গুরুতর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের মধ্য দিয়ে ইসরায়েল স্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে। শুধু গতকালই দেশটি ২৭ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এদিন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় ২৪ ফিলিস্তিন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৮৭ জন। এসব লঙ্ঘনের মানবিক ও নিরাপত্তাজনিত পরিণতির জন্য ইসরায়েলই সম্পূর্ণ দায়ী।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর দাবি করেছে, গাজা ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় হামাসের এক যোদ্ধা ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলা চালানোর পর ইসরায়েল পাল্টা অভিযান চালায়। এতে হামাসের পাঁচ শীর্ষ সদস্য নিহত হয়েছেন।

হামাস অবশ্য দাবি করেছে, ইসরায়েল যাঁদের নিহত হওয়ার কথা বলছে, তাঁদের নাম প্রকাশ করতে হবে। সংগঠনটির রাজনৈতিক ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ সদস্য ইজ্জাত আল-রিশেক বলেন, ‘ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি এড়াতে নানা অজুহাত সৃষ্টি করছে এবং গণবিধ্বংসী যুদ্ধের দিকে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে।’ তিনি মধ্যস্থতাকারী ও মার্কিন প্রশাসনকে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান জানান।

গাজা নগরী থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজজুম বলেন, যুদ্ধবিরতি শুধু নামেই আছে। কারণ, এর মধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনী গাজাজুড়ে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে মানুষের নিরাপত্তাবোধ পুরোপুরি ভেঙে গেছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজার উত্তরে বহু পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। কারণ, ইসরায়েলি সেনারা চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজার গভীরে পর্যন্ত অবস্থান নিয়েছে।

অন্যদিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অনুমোদিত হলেও জরুরি খাদ্য, ত্রাণ ও চিকিৎসাসামগ্রী গাজায় প্রবেশে ইসরায়েল এখনো কঠোর বিধিনিষেধ বজায় রেখেছে।

যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলি হামলায় ধসে যাওয়া একটি ভবন
যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলি হামলায় ধসে যাওয়া একটি ভবন। ছবি: রয়টার্স

No comments

Powered by Blogger.