গুপ্তচরাবৃত্তির অভিযোগে দুই ফিলিস্তিনি শিশুকে আটক করল ইসরায়েল

অধিকৃত পশ্চিম তীরের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হেবরনে মাত্র পাঁচ ও ছয় বছর বয়সী দুই ফিলিস্তিনি শিশুকে আটক করেছে ইসরায়েলি সেনারা। সোমবার পুরনো শহরের ভেতরে ঘটে এই ঘটনা। সেনারা দাবি করেছে, শিশুরা নাকি এক ইসরায়েলি দখলদার বসতির বাড়ি ‘গোয়েন্দাগিরি’ করছিল।

তবে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শিশুরা আসলে বাড়ির কাছেই ফুটবল খেলছিল। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওয়াফার প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় আধা ঘণ্টা আটক রাখার পর ফিলিস্তিনি বাসিন্দা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের হস্তক্ষেপে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত দুই শিশু আতঙ্কে কাঁদছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ সময় একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায়— সশস্ত্র এক ইসরায়েলি সেনার সামনে কাঁদতে কাঁদতে হাত ধরে আছে দুই শিশু। অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয়রা সেনাদের সঙ্গে যুক্তি দেখানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু সেনারা তাদের বারবার উপেক্ষা করছে।

হেবরনের আইন আসকার পাড়ার বাসিন্দা বদর আল-তামিমি আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন, ‘শিশুরা আতঙ্কে কাঁদছিল, এখনো তারা ভয়ের মধ্যে আছে। সেনারা যে বাড়িটি কিছুদিন আগে দখল করে নিয়েছিল সেটি সংস্কার করছিল। শিশুরা অসচেতনভাবে সেই বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে যায়। আর সেটাকেই গোয়েন্দাগিরি বলে অভিযোগ করা হয়।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছে, ‘এটি ফিলিস্তিনিদের প্রতিদিনের নিষ্ঠুর বাস্তবতার প্রতিফলন। ফিলিস্তিনি শিশুদের জীবন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও চলাফেরার অধিকার প্রতিনিয়ত অস্বীকার করা হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই শিশুদের হত্যা, আহত কিংবা নির্বিচারে আটক করছে ইসরায়েলি বাহিনী।’

অধিকৃত পশ্চিম তীরে দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিনিদের চলাফেরায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ, কারফিউ ও নির্বিচারে গ্রেপ্তারের মতো নীতি চালু রয়েছে। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় গণহত্যা শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরেও পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে। প্রতিদিনই সেখানে গণগ্রেপ্তার ও শিশুদের আটকের মতো ঘটনা ঘটছে।

প্রসঙ্গত, গাজায় গত দুই বছরে ইসরায়েলি হামলায় ২০ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক দুই ফিলিস্তিনি শিশু। ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক দুই ফিলিস্তিনি শিশু। ছবি : সংগৃহীত


No comments

Powered by Blogger.