জম্মু-কাশ্মীরে ভূমিধস–হড়পা বান, ভূমিধসে নিহত ৩০
এবার গোটা উত্তর ভারতে অভাবনীয় বৃষ্টি হচ্ছে। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখন্ড ও জম্মু–কাশ্মীরজুড়ে প্রকৃতির তাণ্ডব চলছে। প্রায় প্রতিদিনই হয় ভূমিধস নতুবা হড়পা বানে ভেসে যাচ্ছে জনপদ। মৃত্যু হচ্ছে মানুষ ও গবাদিপশুর। ভেঙে যাচ্ছে ঘরবাড়ি। ক্ষতি হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ও ফসলের। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ের কারণে যোগাযোগব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। রাস্তাঘাটের হাল শোচনীয়। বেশ কিছু সেতু ভেঙে গেছে। উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। মোবাইল টাওয়ার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পানীয় জলের পাইপলাইনের।
জম্মু–কাশ্মীরে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে তিন দিন ধরে। জম্মুর পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। এই অঞ্চলের ডোডা, কিস্তোয়ার, সাম্বা, কাটরা, রিয়াসি, উধমপুর ও জম্মু জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। প্রতিটি নদী বইছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। বহু স্থানে হড়পা বানে ভেসে গেছে জনপদ। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, আরও দুই–তিন দিন এমন বর্ষা চলবে।
বৈষ্ণোদেবী যাত্রাপথে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম ধস নামে দুপুরে। পরে রাতে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী আগে থেকে তৈরি ছিল। ধসের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় উদ্ধারকাজ। সেই কাজে হাত লাগায় সেনাবাহিনীও। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে থাকে।
গতকাল রাত পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার মানুষকে নিরাপদে সরানো হয়েছে। তাঁদের অস্থায়ী ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসাশিবির খোলা হয়েছে। গুরুতর আহত ব্যক্তিদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বৈষ্ণোদেবী মন্দির কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার রাতেই যাত্রা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের মানালির অবস্থাও শোচনীয়। বিপাশা নদীর প্লাবনে ভেসে গেছে শহরের বহু এলাকা। ভেঙে গেছে এক বহুতল হোটেলসহ বেশ কিছু দোকানঘর। মানালি–লেহ্ সড়কের বহু এলাকা প্লাবিত। আটকে রয়েছে বহু গাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকেরা উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎহীন।
বিপর্যয়ের কারণে জম্মু–কাশ্মীরে রেল পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবহাওয়ার উন্নতি ও ভেঙে যাওয়া রেললাইন মেরামত না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। বিপর্যয়ের কারণে বিমান পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে।
![]() |
| ভারতের জম্মুতে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর পানিতে প্লাবিত হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি মন্দির। ২৬ আগস্ট, জম্মু। ছবি: এএফপি |

No comments