প্রাচীন মিশরীয় শহর আলেকজান্দ্রিয়া ধসে পড়ছে কেন?
গবেষণায় দেখা গেছে ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৮৬টি ভবন সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, ২০১টি ভবন আংশিকভাবে ধসে পড়েছে, ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুরনো মানচিত্র (১৮৮৭, ১৯৫৯, ২০০১) ও স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে দেখা গেছে, শহরের উপকূল দ্রুতই ভিতরের দিকে সরছে। মাটির নমুনায় আইসোটোপ বিশ্লেষণ (যেমন বি৭) করে দেখা গেছে, যেসব এলাকায় আইসোটোপের মাত্রা কম, সেসব জায়গার মাটি অনেক বেশি ক্ষয়প্রবণ। গবেষণার সহ-লেখক এবং ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার পানি বিষয়ক বিজ্ঞানী ড. এসসাম হেগগি বলেন- এই ক্ষতির পরিমাণ শুধু ভবনের ইট বা সিমেন্টে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ক্ষতি। আমরা প্রত্যক্ষ করছি কীভাবে উপকূলীয় ঐতিহাসিক শহরগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখন ভবিষ্যতের নয়- এটা এখনই বাস্তব। গবেষকরা প্রাকৃতিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার প্রস্তাব দিয়েছেন, যেমন- উপকূল বরাবর বালুর ঢিবি ও গাছপালা দিয়ে প্রাকৃতিক ব্যারিয়ার তৈরি, যা সমুদ্রের লবণাক্ত পানি প্রবেশ ঠেকাতে সাহায্য করবে। এতে ভবনের নিচে পানির স্তর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারবে না, ফলে ভবনের ভিত্তিও রক্ষা পাবে। আলেকজান্দ্রিয়ার অবস্থা শুধু মিশরের জন্যই নয়, বরং সমুদ্রতটবর্তী ঐতিহাসিক শহরগুলোর জন্য একটি সতর্কবার্তা। যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে আমরা শুধু ভবন নয়, সভ্যতার ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কেই চিরতরে হারাতে পারি।

No comments