গাজায় ত্রাণকেন্দ্রে ফের হামলা চালালো ইসরাইল, নিহত ২৭: ইসরাইলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান পেন ইন্টারন্যাশনালের
গাজায় ত্রাণকেন্দ্র লক্ষ্য করে আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে কমপক্ষে ২৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা কয়েক ডজন। মঙ্গলবার উপত্যকাটির দক্ষিণাঞ্চলে রাফা শহরের একটি ত্রাণকেন্দ্রে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর এমন নৃশংস হামলা চালায় ইসরাইল। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো ত্রাণকেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালালো ইসরাইলি বাহিনী। গুলি চালানোর বিষয়টি স্বীকার করেছে ইসরাইল। দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে রাফার একটি ত্রাণকেন্দ্রে কার্যক্রম পরিচালনার সময় একদল মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে তাদের বাহিনী। তাদের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় লোকগুলোকে গুলি করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আইডিএফ। তবে এ বিষয়ে তদন্তের কথা জানিয়েছে ইসরাইল। গাজার উত্তরাঞ্চলে তিন সেনা নিহতের খবরের পরপরই ত্রানকেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। তবে এসব হতাহতের বিষয় স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। ত্রাণকেন্দ্রে এমন হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। মঙ্গলবার এমন হত্যাকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধের সামিল বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ব মানবাধিকার এই সংস্থা। তারা বলেছে, গাজায় খাদ্য সংগ্রহ করতে আসা নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। যা কখনই মেনে নেয়ার মত না। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতারেসের পক্ষে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান পেন ইন্টারন্যাশনালের
রাইটার্স সংগঠন পেন ইন্টারন্যাশনাল সোমবার এক খোলা চিঠিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে গাজা যুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত সকল পক্ষের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিতে। বিশেষত ইসরাইলের ওপর। কারণ তারা দখল করে নেয়া ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলায় ওইসব অস্ত্র ব্যবহার করছে। লন্ডন-ভিত্তিক এই সংগঠনটি খোলা চিঠিতে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গাজায় চলমান ‘গণহত্যার’ জন্য ইসরাইলকে দায়বদ্ধ না রাখায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের ব্যর্থতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ।
চিঠিতে প্রতিদিনের বেসামরিক হত্যা ও দীর্ঘ অবরোধের নিন্দা জানানো হয়েছে, এই আক্রমণ অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, দখল করে নেয়া ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি লেখকদের মর্মস্পর্শী সাক্ষ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তারা নিশ্চিত করেছেন- ইসরাইলের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনি জনগণ এবং তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে মুছে ফেলার জন্য পরিকল্পিত ও পদ্ধতিগত প্রচেষ্টার প্রমাণ রয়েছে, বিশেষত গাজায়। সংগঠনটি জানিয়েছে, অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে তাদের অভিন্ন মত হলো, গাজায় বিভিন্ন উপায়ে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে।
পেন ইন্টারন্যাশনাল জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরাইলি বোমাবর্ষণে অন্তত ২৩ জন লেখক নিহত হয়েছেন (শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী ছাড়া)। পেন ইন্টারন্যাশনাল এই সময়টিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর লেখকদের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী সময় বলে আখ্যায়িত করেছে। তারা বলেছে, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংস, সাংস্কৃতিক স্থান ধ্বংস, লেখক ও সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে হামলা- সবই ফিলিস্তিনি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার একটি ‘ইচ্ছাকৃত কৌশল’।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অসংখ্য সংগঠন, বিশেষজ্ঞ ও আইনবিদরা মনে করছেন গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল। তার সঙ্গে যুক্ত হলো পেন ইন্টারন্যাশনাল। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) গত বছর বলেছে, ফিলিস্তিনিদের গণহত্যার যৌক্তিক ঝুঁকি রয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ, মানবিক সংস্থা ও শত শত আইনি বিশেষজ্ঞ ও গণহত্যা গবেষক এই মূল্যায়নের সঙ্গে একমত। এমনকি ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট হারেৎজ পত্রিকায় লেখা এক নিবন্ধে এই অভিযানকে ‘বিনাশযুদ্ধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যদিও তিনি ‘গণহত্যা’ শব্দটি ব্যবহার থেকে বিরত ছিলেন।
পেন ইন্টারন্যাশনালের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গাজার অনেক মৌলিক ও অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অপরিবর্তনযোগ্য ক্ষতি হয়েছে- স্বাধীন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিগত লাইব্রেরি ও সাহিত্যকর্ম, যেগুলো কঠিন শর্তে গড়ে উঠেছিল এবং পরে যুদ্ধের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে।
২০২৫ সালের মে মাসের শেষ পর্যন্ত ইউনেস্কো নিশ্চিত করেছে, গাজায় ১১০টি সাংস্কৃতিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় নিদর্শন, ঐতিহাসিক ভবন, জাদুঘর এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান।
পেন ইন্টারন্যাশনালের সংগৃহীত সাক্ষ্য ফিলিস্তিনি লেখকদের প্রতিদিনকার জীবন-মরণ পরিস্থিতি তুলে ধরে। চিঠিতে তারা বলেছে, নিরবচ্ছিন্ন ইসরাইলি সামরিক অভিযান, তথাকথিত ‘নিরাপদ অঞ্চল’-এও উচ্চ বিস্ফোরক দিয়ে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ, বেসামরিকদের লক্ষ্য করে স্নাইপার হামলা এবং মানবিক সহায়তার ওপর অব্যাহত বিধিনিষেধ- এই সবই দৈনন্দিন এক কঠোর বাস্তবতা। প্রত্যেক লেখকই বারবার জোর দিয়ে বলেছেন: গাজায় নিরাপদ কোনও স্থান নেই।
১৯২১ সালে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত পেন ইন্টারন্যাশনাল এখন একটি বৈশ্বিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত হয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সংগঠনটি একটি প্রস্তাব পাস করে, যেখানে ৭ অক্টোবর হামলার পর ফিলিস্তিন ও ইসরাইলে লক্ষ্যভিত্তিক হত্যা, নির্বিচার আটক এবং তথ্যপ্রবাহে বাধার নিন্দা জানানো হয়। এইসব লঙ্ঘনের জন্য প্রস্তাবে মূল দায়িত্ব চাপানো হয় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের ওপর।
চিঠিতে প্রতিদিনের বেসামরিক হত্যা ও দীর্ঘ অবরোধের নিন্দা জানানো হয়েছে, এই আক্রমণ অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, দখল করে নেয়া ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি লেখকদের মর্মস্পর্শী সাক্ষ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তারা নিশ্চিত করেছেন- ইসরাইলের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনি জনগণ এবং তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে মুছে ফেলার জন্য পরিকল্পিত ও পদ্ধতিগত প্রচেষ্টার প্রমাণ রয়েছে, বিশেষত গাজায়। সংগঠনটি জানিয়েছে, অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে তাদের অভিন্ন মত হলো, গাজায় বিভিন্ন উপায়ে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে।
পেন ইন্টারন্যাশনাল জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরাইলি বোমাবর্ষণে অন্তত ২৩ জন লেখক নিহত হয়েছেন (শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী ছাড়া)। পেন ইন্টারন্যাশনাল এই সময়টিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর লেখকদের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী সময় বলে আখ্যায়িত করেছে। তারা বলেছে, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংস, সাংস্কৃতিক স্থান ধ্বংস, লেখক ও সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে হামলা- সবই ফিলিস্তিনি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার একটি ‘ইচ্ছাকৃত কৌশল’।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অসংখ্য সংগঠন, বিশেষজ্ঞ ও আইনবিদরা মনে করছেন গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল। তার সঙ্গে যুক্ত হলো পেন ইন্টারন্যাশনাল। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) গত বছর বলেছে, ফিলিস্তিনিদের গণহত্যার যৌক্তিক ঝুঁকি রয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ, মানবিক সংস্থা ও শত শত আইনি বিশেষজ্ঞ ও গণহত্যা গবেষক এই মূল্যায়নের সঙ্গে একমত। এমনকি ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট হারেৎজ পত্রিকায় লেখা এক নিবন্ধে এই অভিযানকে ‘বিনাশযুদ্ধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যদিও তিনি ‘গণহত্যা’ শব্দটি ব্যবহার থেকে বিরত ছিলেন।
পেন ইন্টারন্যাশনালের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গাজার অনেক মৌলিক ও অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অপরিবর্তনযোগ্য ক্ষতি হয়েছে- স্বাধীন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিগত লাইব্রেরি ও সাহিত্যকর্ম, যেগুলো কঠিন শর্তে গড়ে উঠেছিল এবং পরে যুদ্ধের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে।
২০২৫ সালের মে মাসের শেষ পর্যন্ত ইউনেস্কো নিশ্চিত করেছে, গাজায় ১১০টি সাংস্কৃতিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় নিদর্শন, ঐতিহাসিক ভবন, জাদুঘর এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান।
পেন ইন্টারন্যাশনালের সংগৃহীত সাক্ষ্য ফিলিস্তিনি লেখকদের প্রতিদিনকার জীবন-মরণ পরিস্থিতি তুলে ধরে। চিঠিতে তারা বলেছে, নিরবচ্ছিন্ন ইসরাইলি সামরিক অভিযান, তথাকথিত ‘নিরাপদ অঞ্চল’-এও উচ্চ বিস্ফোরক দিয়ে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ, বেসামরিকদের লক্ষ্য করে স্নাইপার হামলা এবং মানবিক সহায়তার ওপর অব্যাহত বিধিনিষেধ- এই সবই দৈনন্দিন এক কঠোর বাস্তবতা। প্রত্যেক লেখকই বারবার জোর দিয়ে বলেছেন: গাজায় নিরাপদ কোনও স্থান নেই।
১৯২১ সালে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত পেন ইন্টারন্যাশনাল এখন একটি বৈশ্বিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত হয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সংগঠনটি একটি প্রস্তাব পাস করে, যেখানে ৭ অক্টোবর হামলার পর ফিলিস্তিন ও ইসরাইলে লক্ষ্যভিত্তিক হত্যা, নির্বিচার আটক এবং তথ্যপ্রবাহে বাধার নিন্দা জানানো হয়। এইসব লঙ্ঘনের জন্য প্রস্তাবে মূল দায়িত্ব চাপানো হয় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের ওপর।

No comments