কংগ্রেসের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী তিন দিন আগেই পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার খবর জানতেন: ১৪ প্রশ্ন তৃণমূলের

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের হত‌্যাকাণ্ড নিয়ে কংগ্রেস বিস্ফোরক অভিযোগ করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে অভিযোগ করছেন, প্রধানমন্ত্রী তিন দিন আগেই জানতেন সন্ত্রাসী হামলার খবর। গোয়েন্দারা এই খবর আগেই জানিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে।  তাই জম্মু ও কাশ্মীর সফর বাতিল করেছিলেন মোদি।এমনই  দাবি করেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। গত ২২ এপ্রিল পহলেগাঁওয়ের বৈসারন উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলায় ২৫ জন পর্যটক ও এক কাশ্মীরির মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। পাকিস্তানকে প্রত্যাখ্যাত করার রব উঠেছে সর্বত্র। ইতিমধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক অর্থনৈতিক স্ট্রাইক করেছে ভারত সরকার। এই আবহে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলর দায় চাপাতে মরিয়া খাড়গে।

মঙ্গলবার রাঁচির এক সভায় কংগ্রেস সভাপতি বলেন, আমি সংবাদপত্রে পড়েছি যে ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার তিন দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি গোয়েন্দা রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল। তাই তিনি কাশ্মীর সফর বাতিল করেন । যখন গোয়েন্দা সংস্থাগুলি আপনাকে বলেছিল যে সেখানে যাওয়া ঠিক হবে না, তখন আপনি কেন পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করে নেননি?' খাড়গের কথায়, 'সরকার স্বীকার করেছে যে পহেলগাঁওয়ে ছুটি কাটাতে আসা পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করেছিল।  কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, 'আমাদের প্রশ্ন হল আপনি যখন জানতেন, তাহলে কেন সঠিক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি?'
অন্যদিকে, কংগ্রেস সভাপতিকে এই মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছে বিজেপি। খাড়গেকে নিশানা করে বিজেপির মুখপাত্র সিআর কেশবন বলেন, 'তিনি আধুনিককালের মীর জাফরের মতো বিশ্বাসঘাতক ভাষণ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তার বিষাক্ত, ভিত্তিহীন ক্ষোভ অত্যন্ত নিন্দনীয়। খাড়গের মন্তব্য ক্ষমার অযোগ্য। তাকে স্পষ্ট করে বলতে হবে যে তিনি এই ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য করার জন্য কোথা থেকে তথ্য পেয়েছেন।'

পেহেলগাম হামলার ১৪ দিন পর মোদির কাছে ১৪ প্রশ্ন তৃণমূলের by সেবন্তী ভট্টাচার্য্য
পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের অভিযোগ, ওই ঘটনায় সীমান্তপারের যোগ রয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। এএনআই সূত্রে খবর, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে পাকিস্তানের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, পেহেলগামের ওই ঘটনায় লস্কর-ই তৈয়বার কোনও যোগ রয়েছে কিনা। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের পরামর্শও দেয়া হয়েছে পাকিস্তানকে। যদিও সেই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দু’সপ্তাহ পেরিয়ে যাবার পর এখনও অধরা মাস্টারমাইন্ডরা। কেন এখনও অধরা ? এই প্রশ্নে মোদি সরকারকে বারবার বিদ্ধ করেছেন বিরোধীরা। এবার পেহেলগাম হামলার ১৪ দিনে মোদি সরকারের কাছে ১৪ দফা প্রশ্ন তুলে ধরলো পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সন্ত্রাসী হামলায়, স্বজনহারা পরিবার, দেশের নিরাপত্তা নিয়ে একে একে ১৪টি প্রশ্ন তোলা হয়েছে ঘাসফুল শিবিরের তরফে। সেইসঙ্গে কটাক্ষ করে দাবি, ‘উত্তর দিন মৌনমোদী।’শোকের আবহেও দেশজুড়ে ক্ষোভের আঁচ দেখা গেছে। প্রত্যাঘাত চাইছেন সকলে। দফায় দফায় সেনাবাহিনীর প্রধান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক সারছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তৎপরতা সেনাবাহিনীতেও। জোর দেয়া হয়েছে মহড়ায়। যুদ্ধ যুদ্ধ আবহ। তবে এখনও পর্যন্ত হামলাকারীদের নাগাল পাওয়া যায়নি। এবার তৃণমূলের তরফে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো হল সোশাল মিডিয়ায়। নৃশংস হামলার ১৪ দিন পর প্রশ্ন তোলা হলো -

অবিচারের ৩৩০ ঘণ্টা পার, তবু কেন সব সন্ত্রাসী এখনও ধরা পড়ল না?
তদন্তের অগ্রগতি কী?
কেন আগাম ইঙ্গিত সত্ত্বেও এত বড় হামলা এড়ানো গেল না?
কেন নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করে প্রধানমন্ত্রী বিহারের নির্বাচনী প্রচার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন?
এই মুহূর্তে দেশের সুরক্ষায় কী ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্র?

এমন হাজারো প্রশ্নের মাঝে রয়েছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি জিজ্ঞাসাও। সীমান্ত সুরক্ষার কাজ করতে গিয়ে পাক রেঞ্জার্সের হাতে ‘বন্দি’ পশ্চিমবঙ্গের  জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউকে কবে দেশে ফেরানো হবে?

mzamin

No comments

Powered by Blogger.