স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইলেন ইশরাক

অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেনের পদত্যাগ চাইলেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন।

সোমবার (১২ আগস্ট) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ দাবি করেন তিনি।

ইশরাক লিখেছেন, ‘অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেনের পদত্যাগ চাই।’

প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে ছাত্র আন্দোলনের সময় আহত আনসার সদস্যদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) গিয়ে আওয়ামী লীগকে দল পুনর্গঠনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা আপনাদের পার্টি রিঅর্গানাইজ করেন। এই পার্টির অনেক অবদান আছে বাংলাদেশে। এটা আমরা অস্বীকার করতে পারি না।’

তিনি বলেন, ‘লোক জড়ো করেন আর যাই করেন এমন কিছু করবেন না যাতে আপনাদের জীবন বিপন্ন হয়। এ দেশের পাবলিক এখনো আপনাদের গ্রহণ করতে আসেনি। আমি বরং মনে করি আপনারা আপনাদের পার্টি রিঅর্গানাইজ করেন। এই পার্টির অনেক অবদান আছে বাংলাদেশে। এটা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। পার্টিকে রিঅর্গানাইজ করেন, পলিটিক্যাল পার্টির মতো যেভাবে থাকে। ইলেকশন এলে ইলেকশন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই স্বপ্নটা যদি আপনারা দেখেন তাহলে কী করবেন আপনারা এই দেশটা আরেকজনের হাতে তুলে দেবেন না।’

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এদেশের লোক এত তাড়াতাড়ি ভুলে নাই। সময় দেন হয়তো ভুলে যাবে। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি ভোলে নাই। কারণ যাকে নেতা ধরছিলেন সেই নেতারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যাকে ধরছে তাকে আমরা বাঁচাতে পারছি না। অনেক নেতাকে অনেকে বাঁচিয়েছে। আমরা জানি কে কোথায় আছে। কিন্তু ওটা না করে আপনারা বরং পার্টিকে, এটা অনেক বড় পার্টি। অ্যান্ড আই হ্যাভ লট অব রেসপেক্ট ফর আওয়ামী লীগ। এক সময় আমাদের মতো বাঙালিদের তাদের ভরসার জায়গা ছিল এই পার্টি। বাংলাদেশে ’৫২-এর আন্দোলন, ’৬৯-এর গণআন্দোলন, স্বাধীনতা- এটা পারসোনাল কোনো কারণে নষ্ট করবেন না। এটা জাতীয় সম্পদ।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা আসুন যারা রেগুলার (রাজনীতি) করতে চান। এখানে মারামারি করে কোনো লাভ নেই। আরও কিছু লোকের মৃত্যু আমরা চাই না। অলরেডি ৪০০ থেকে ৫০০ হয়তো তারও বেশি মারা গেছে। উভয়পক্ষেই। পুলিশেরও একই অবস্থা হয়েছে, আনসারেরও এই অবস্থা হয়েছে।’

এর আগে বিকেলে রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামপুরের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ইশরাক বলেন, ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিজয়কে ব্যর্থ করতে বিদেশ পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা ও তার ছেলে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। সেই সঙ্গে দেশে বসেও একটি বিশেষ মহল পরিকল্পিতভাবে এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও উপাসনালয়গুলোতে হামলার অপচেষ্টা করে, বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের চেষ্টা করছে দুর্বৃত্তরা। তাদের রুখে দিতে হবে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পতন হলেও তার দোসররা নানা রকম চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। বিচ্ছিন্নভাবে ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে নাশকতা সৃষ্টি করে সর্বসাধারণের গ্রহণযোগ্য ও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল বিএনপিকে দায়ী করার ষড়যন্ত্র চলছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব ধরনের নাশকতা প্রতিহত করতে বিএনপি প্রস্তুত রয়েছে।

ইশরাক হোসেন আরও বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর এদেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা যে সফলতা পেয়েছি তার মর্যাদা ধরে রাখতে হবে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। দেশ রক্ষায় নিজেদের ত্যাগকে একটি আধুনিক ও উন্নত গণতান্ত্রিক সরকার গঠনে উৎসর্গ করতে হবে। বিএনপির প্রতি মানুষের প্রত্যাশা অনেক। জনগণের প্রত্যাশাকে সম্মান জানিয়ে নিজেদের লোভ-হিংসা পরিত্যাগ করতে হবে। বিএনপি একটি শান্তিপ্রিয় দল। দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বিএনপি নেতাদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান করছি।

No comments

Powered by Blogger.