পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত দেশের ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী

কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ইন্টারনেট আসক্তি, বিষণ্নতা এবং পর্নোগ্রাফি আসক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এই সমস্যার বর্তমান প্রভাব বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে একটি জাতীয় পর্যায়ের গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। এ গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত রয়েছেন।

চীনের নানজিং ইউনিভার্সিটির স্কুল অব দ্য এনভায়রনমেন্টের পিএইচডি শিক্ষার্থী মো. আবু বকর সিদ্দিকের তত্ত্বাবধানে বিখ্যাত উইলি পাবলিশারের ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল হেলথ সায়েন্স রিপোর্টের আগস্ট সংখ্যায় এ গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। এ গবেষণায় মোট ৮ হাজার ৮৩২ জন কিশোর-কিশোরী অংশগ্রহণ করে। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, ৬৩% শিক্ষার্থী ইন্টারনেট আসক্তিতে, ৭৬.৬% শিক্ষার্থী বিষণ্নতায় এবং ৬২.৯% শিক্ষার্থী পর্নোগ্রাফি আসক্তিতে ভুগছে। বিষণ্নতা এবং উদ্বেগজনিত লক্ষণগুলি ইন্টারনেট আসক্তির সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে সম্পর্কিত। গবেষণার বিষয়ে মো আবু বকর সিদ্দিক বলেন, গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মেয়ে শিক্ষার্থীরা ছেলে শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেশি বিষণ্নতায় ভুগছে। অপরদিকে, ছেলে শিক্ষার্থীরা মেয়ে শিক্ষার্থীদের তুলনায় পর্নোগ্রাফি আসক্তিতে বেশি ভুগছে। ইন্টারনেট আসক্তি, বিষণ্নতা এবং পর্নোগ্রাফি আসক্তির নেতিবাচক প্রভাব কিশোর-কিশোরীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর গভীরভাবে প্রভাব ফেলে।
এ গবেষক আরও বলেন, গবেষণাটি ইন্টারনেট আসক্তি, বিষণ্নতা এবং পর্নোগ্রাফি আসক্তি হ্রাসে সমন্বিত মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা, ডিজিটাল লিটারেসি প্রোগ্রাম এবং পরিবার ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেছে।
এ গবেষণায় অবদান রেখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইরিন পারভিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. খালিদ সাইফুল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আখের আলী, ইউনিভার্সিটি সাইন্স মালয়েশিয়ার আল মাহমুদ, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটির মেহেদী হাসান, মালয়েশিার আলবুখারী ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শেখ মুযযাম্মিল হোসেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোনিয়া মঞ্জুর, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামের যোবায়ের আহমেদ এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিনের (নিপসম) মোহাম্মদ মেসবাহউর রহমান।

No comments

Powered by Blogger.