ভারতের মধ্যপ্রদেশে ‘হানি-ট্রাপ’

ভারতের মধ্যপ্রদেশে ‘হানি-ট্রাপ’। একটি উচ্চ পর্যায়ের চাঁদাবাজি চক্রের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এই তদন্ত হচ্ছে এক ডজন শীর্ষ আমলা, মধ্য প্রদেশের সাবেক আটজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তদন্তে যৌনতা বিষয়ক কমপক্ষে ১০০০ সেক্স চ্যাটের ক্লিপ, রগরগে ভিডিও ও অডিও পাওয়া গেছে কমপিউটার ও মোবাইল ফোনে। এগুলোই প্রমাণ হিসেবে সামনে আনা হচ্ছে। সম্পদশালী, রাজনীতিক ও আমলাদের টার্গেট করে এই ফাঁদ পাতা হয়েছিল। এর সঙ্গে জড়িত ৫ জন নারী। এর মধ্যে কংগ্রেস আইটি সেলের সাবেক একজন কর্মকর্তার স্ত্রীও রয়েছেন। পুলিশি অভিযানে মোবাইলে কমপক্ষে ২০০ কন্টাক্ট নম্বর উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই ফাঁদ শুধু মধ্য প্রদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।

এই কেলেঙ্কারির তদন্ত করছেন স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমের (এসআইটি) সঞ্জীব শামি। তিনি বলেছেন, অভিযুক্তদের কাছ থেকে সুবিধা নিতেন এমন কমপক্ষে ১০ জন সিনিয়র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তারা তদন্ত করছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বিজেপি ও কংগ্রেস উভয় দলেরই। বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫ জন নারীর একটি গ্যাং। তারা হলেন শ্বেতা জৈন (৩৯), আরেকজন শ্বেতা জৈন (৪৮), বারখা সোনি (৩৫), আরতি দয়াল (৩৪) ও ১৮ বছর বয়সী এক কলেজছাত্রী। গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরতি দয়ালের গাড়ির চালককেও। কংগ্রেসের আইটি সেলের সাবেক কর্মকর্তা অমিত সোনির স্ত্রী হলেন বারখা সোনি। বিজেপির এমএলএ ব্রিজেন্দ্র প্রতাপ সিংয়ের কাছ থেকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে একটি স্থানীয় এনজিও চালাতেন শ্বেতা জৈন। তিনিই ওই হানিট্রাপ পরিচালনা করতেন বলে অভিযোগ আছে। সূত্রগুলো বলেছে, রাজ্যের রাজনীতিকদের সঙ্গে তারই ছিল যোগসূত্র। মহারাষ্ট্রের মারাথওয়াদা এলাকার একজন প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। মধ্য প্রদেশের সাবেক একজন মন্ত্রীর সহযোগিতায় তিনি ওই রাজনীতিকের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে শ্বেতা জৈনকে এই দলের মূল হোতা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। তার এই চক্রে কমপক্ষে দুই ডজন কলেজগামী ছাত্রী রয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। এসব ছাত্রী মধ্যবিত্ত পরিবারের। তাদেরকে ব্যবহার করে ওইসব শীর্ষ কর্মকর্তা বা রাজনীতিককে ফাঁদে ফেলা হয়। শ্বেতা জৈন স্বীকার করেছেন, ভাল কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি অনেক কলেজছাত্রীকে প্রলুব্ধ করেছেন। তাদেরকে বিলাসী জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। এভাবে তিনি তাদেরকে পাঁচ তারকা হোটেলে থাকার প্রলোভন দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার করা ওই ৫ নারীর প্রত্যেকেরই আছে নিজস্ব গ্যাং। সূত্রগুলো বলছে, এটাই যাবতকালের সবচেয়ে বড় সেক্স স্ক্যান্ডাল। এই গ্যাংয়ের একজন সম্প্রতি তদন্তকারী সংস্থার একজন শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাকে টার্গেট করে। তার কাছে একটি ভিডিওর জন্য দুই কোটি রুপি দাবি করে। সম্প্রতি আরতি দয়ালের বিরুদ্ধে ৩ কোটি রুপি দাবি করার অভিযোগে একটি মামলা করেন ইন্দোর মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের একজন কর্মকর্তা। এরপরই এই গ্যাংয়ের বিষয়টি উন্মোচিত হয়।

No comments

Powered by Blogger.