তাবরেজ আনসারীর পিতাকেও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল ঝাড়খন্ডে

ভারতের ঝাড়খন্ডে ১৭ই জুন পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে মুসলিম যুবক তাবরেজ আনসারীকে। ঠিক এর ১৫ বছর আগে তার পিতা মাসকুর আনসারীকেও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। জামশেদপুরের বাগবেড়া এলাকায় চুরির অভিযোগে তাকে ধরে প্রচন্ড প্রহার করেছিল লোকজন। তাবরেজ আনসারীকে হত্যার পর এখন এতদিন পরে সেই কথা সামনে তুলে এনেছেন স্থানীয়রা। ফলে ওই ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে পুলিশ এখন। এ ঘটনায় বাগবেড়া পুলিশ স্টেশনে একটি মামলা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া
জামশেদপুরে কংগ্রেস দলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোশাহিদ খান বলেছেন, মাসকুর আনসারীর মৃতদেহ সনাক্ত করার পর তা তার গ্রামের বাড়ি আনতে তিনি জামশেদপুরে গিয়েছিলেন।
স্থানীয় দু’জন প্রত্যক্ষদর্শী ওই ঘটনার সাক্ষী। তবে তদন্ত সংস্থাগুলো তাদেরকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করতে পারে এ আশঙ্কায় তারা তাদের নাম প্রকাশ করতে চান না। তবে তারা বলেছেন, দাঙ্গাবাজরা হত্যা করেছিল মাসকুরকে। তাকেও উত্তেজিত জনতা আটক করেছিল। এরপর প্রহার করা হয়েছিল। কেটে দেয়া হয়েছিল গলা। একজন বয়স্ক নারী বলেন, যখন তার মৃতদেহে গ্রামে আনা হয়েছিল তখন আমরা তা দেখেছি।
বাগবেড়া এলাকার অনেক মানুষ ২০০৪ সালের নভেম্বরে সংঘটিত সেই পিটিয়ে হত্যার ভয়াবহতা স্মরণ করেন এখনও। স্থানীয় নেতা ও সমাজসেবক সুবোধ কুমার ঝা বলেন, একদিন রামনগরের লোকজন মাসকুরকে আটক করে এবং তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। উল্লেখ্য, প্রায় এক সপ্তাহ আগে মাসকুরের ছেলে তাবরেজকে একটি মোটর সাইকেল চুরির দায়ে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়। এরপর জনতা তাকে বেদম মারপিট করে। সারারাত একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখে। তারপর তুলে দেয় পুলিশের হাতে। পুলিশ ২ দিন পরে তাকে হাসপাতালে পাঠায়। পরে তিনি মারা যান। তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, তিনি মুসলিম হওয়ায় তাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। নির্যাতনের সময় তাকে ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘জয় হনুমান’ স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
ভারতে মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা
তাবরেজ আনসারী
ভারতে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোর পর চোর ‘আখ্যা’ দিয়ে এক মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যার দায়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
ভারতের পূর্বাঞ্চলের প্রদেশ ঝাড়খন্ডে ২৪ বছর বয়সী তাবরেজ আনসারি গত ১৮ জুন নির্যাতিত হওয়ার পর ২২জুন মারা যান।
তাবরেজ আনসারির বিরুদ্ধে মোটর সাইকেল চুরির অভিযোগ এনে গণপিটুনি দেয়া হয়। গণপিটুনির বহু ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি তাবরেজকে একটি কাঠের লাঠি দিয়ে নৃশংসভাবে পেটাচ্ছেন। আক্রান্ত যুবক ছেড়ে দেওয়ার আকুতি নিয়ে হাত জোড় করলেও তাতে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই ওই ব্যক্তির।
আর একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, জোর করে তাবরেজকে বলানো হচ্ছে 'জয় শ্রী রাম' ও 'জয় হনুমান'।
তাবরেজের আত্মীয়রা অভিযোগ করেছেন, তাবরেজের সঠিক চিকিৎসার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করলেও লাভ হয়নি। এমনকী, তার সঙ্গে কাউকে দেখাও করতে দেওয়া হয়নি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বহু আগেই তিনি মারা গিয়েছিলেন তাবরেজ, এই অভিযোগও করা হয়েছে।
বিবিসি'কে তার স্ত্রী শাহিস্তা পারভিন জানান, আনসারিকে সারারাত একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেঁধে রাখা হয় এবং পরদিন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তাবরেজের স্ত্রী আরো দাবি করেছেন, ‘ওকে নির্দয়ের মতো মারা হয়েছে কারণ ও মুসলিম। আমার কেউ নেই। কোনও শ্বশুর-শাশুড়িও নেই। আমি কী করে বাঁচব? আমার ন্যায়বিচার চাই।’
এভাবেই নির্যাতন চালিয়ে পেহলু খানকে হত্যা করা হয়
কথিত গো-রক্ষকদের বর্বরতার শিকার চার দলিত
তাবরেজের মতো মারা হয়েছে আরো অনেককে কারণ মুসলিম
https://indianexpress.com/article/cities/ludhiana/had-to-pay-money-cows-to-satish-kumar-only-then-allowed-to-go-2962953/
https://pistonclasico.com/search/violence-against-muslims-by-cow-vigilantes-increased

এভাবেই নির্যাতন চালিয়ে ভারতে গো-রক্ষক্ষা করা হচ্ছে।


No comments

Powered by Blogger.