এশিয়ায় প্রভাব বাড়াতে চীনা তৎপরতার মধ্যে বেইজিং সফরে খলিলজাদ

আফগানিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালমাই খলিলজাদ পূর্বনির্ধারিত এক বৈঠকে অংশ নিতে বর্তমানে বেইজিং সফর করছেন। আমেরিকান দূতাবাসের একজন মুখপাত্র বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ১৮ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যখন জোর প্রচেষ্টা চলছে এবং চীন যখন এ অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে, তখন এই সফরে গেলেন খলিলজাদ।
মুখপাত্র খলিলজাদের সফরের ব্যাপারে বিস্তারিত আর কিছু বলেননি, তবে মাত্র কয়েকদিন আগেই খলিলজাদ বলেছেন যে, এই প্রথমবারের মতো তিনি শান্তি আলোচনার ব্যাপারে ‘সুনির্দিষ্ট’ অগ্রগতির কথা জানাতে পারবেন, যে ইস্যুগুলো নিয়ে শান্তি আলোচনা চলছে। এরপরই তিনি বেইজিং সফরে গেলেন।
মুখপাত্র অবশ্য তার পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি।
খলিলজাদ বলেছেন যে, তালেবানদের সাথে সর্বশেষ বৈঠকটি এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে ফলপ্রসূ হয়েছে। আলোচনার ইস্যুতে এখানে আন্ত:অভ্যন্তরীণ আলোচনা এবং অস্ত্রবিরতির সম্ভাব্য সময়সীমা যুক্ত করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও গতমাসে বলেছেন যে, ১ সেপ্টেম্বরের আগেই একটা শান্তি চুক্তিতে পৌঁছানো যাবে বলে মনে করছে ওয়াশিংটন।
আফগানিস্তানে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে এটাও জানা গেছে যে, তালেবানদের একটি প্রতিনিধি দল এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইও সম্প্রতি বেইজিং সফর করেছেন।
পাকিস্তানের পাশাপাশি ইরান, রাশিয়া ও চীনও আফগানিস্তানে তাদের প্রভাব বাড়াচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র আফগান ন্যাশনাল সিকিউরিটি ফোর্সেসকে সহায়তার জন্য বহু বিলিয়ন ডলার ব্যায় করে আসছে।
চীন এর আগে তালেবান ও আফগার সরকারের মধ্যে আলোচনার আয়োজন করেছিল। দেশটির খনিজ সম্পদের ব্যাপারে চীনের আগ্রহ রয়েছে। তাছাড়া আফগানিস্তানের ওয়াখান করিডোর এলাকা দিয়ে চীনের ভেতরে যাতে সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য আফগানিস্তানের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য চেষ্টা করছে চীনও।
আফগান শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সাথে বৈঠকেও অংশ নিয়েছে চীন। এপ্রিলে মস্কোতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের পর একটা যৌথ বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়, যেখানে কাবুল সরকারের প্রতিনিধিসহ আফগানিস্তানের প্রতিনিধিদের সাথে যত দ্রুত সম্ভব আলোচনায় বসার জন্য তালেবানদেরকে উৎসাহিত করা হয়েছে”।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, তালেবানরা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেটিকে বিবেচনায় নিয়েছে তারা। এদের মধ্যে সেই গ্রুপও রয়েছে, যারা উত্তরপশ্চিমের জিনজিয়াংয়ে চীন সরকারকে উৎখাত করতে চায়।

No comments

Powered by Blogger.