মশক নিধনে এবার কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর!

ডেঙ্গু এবার আলোচিত বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, ‘সেজন্য সিটি করপোরেশনকে চার ভাগে ভাগ করে প্রত্যেক ভাগে সাত জন করে মোট ২৮ জন কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দিয়েছি। যাদের কাজ হবে কোন কোন এলাকায় মশার উপদ্রব বাড়ছে, কোথায় ওষুধ ছিটানো লাগবে, এসব চিহ্নিত করা, সেসব এলাকায় মশক নিধনকর্মী পাঠানো।’
আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন ও খালগুলো নিয়মিত পরিষ্কারকরণ এবং মশক নিধনে কার্যকর পদেক্ষেপ গ্রহণ বিষয়ক এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গত ৭ জুলাই রবিবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
সাঈদ খোকন বলেন, ‘দক্ষিণের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বলছি, ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনও পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। তারপরও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ১৫০টি মেডিক্যাল টিমও গঠন করেছি। ১৫ জুলাই থেকে তারা কাজ শুরু করবে। এরা রোগীর বাড়িতে বাড়িতে যাবে। বিনামূল্যে চিকিৎসা দেবে। প্রয়োজনে হাসপাতালে পাঠাবে। হাসপাতালের সব খরচও সিটি করেপারেশনই বহন করবে।’
সাঈদ খোকন আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু এবার আলোচিত বিষয়। উপদ্রবও বেড়েছে। এ কারণে আমরা রুটিন ওয়ার্কের বাইরেও ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ কার্যক্রম চালু করেছি। আমরা মনে করি, কার্যক্রম এবং উদ্যোগের সঙ্গে জনসচেতনতা যদি এক করতে পারি, তাহলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সহজ। সচেতনতা বাড়াতে মসজিদের খুতবায় বয়ান দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সচেতনতা বাড়াতে কাজ চলছে।’
হটলাইন চালু করা হবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘হটলাইনের মাধ্যমে ডেঙ্গুর খবর পেলে সেখানে চিকিৎসক পাঠানো হবে।’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি দাবি করে সাঈদ খোকন বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবে না। ক্ল্যাসিক্যাল ডেঙ্গু হলে ৭-১০ দিনে সুস্থ হওয়া যায়। ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ২১শ। এর মধ্যে ১৮৭৫ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। মাত্র ৩শ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মারা গেছেন মাত্র ২ জন।’
উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধ চ্যালেঞ্জ। জনগণকে সম্পৃক্ত করে মশা নিধন করবো। প্রতি ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে, মহল্লায়-মহল্লায় মশক নিধনকর্মীর মোবাইল নম্বরসহ চটি বই বিতরণ করবো। ওয়েবসাইটেও মশক নিধনকর্মীদের তথ্য দেওয়া থাকবে।’
উত্তর সিটি করপোরেশনে মশার ওষুধ সরবরাহকারী দি লিমিট এগ্রো প্রোডাক্টকে কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘তিনবার পরীক্ষা করে প্রমাণিত হয়েছে তাদের ওষুধ ভালো না। তারা আর টেন্ডারে অংশ নিতে পারবে না। আগামীতে ডব্লিউএইচও অনুমোদিত ওষুধ কিনবো।’
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মশার উপদ্রব বেড়েছে। বর্ষা আসার আগেই ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে। এর উপকারও আমরা পাচ্ছি। নাগরিক জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে দুই সিটি কাজ করছে। আমরা স্বাচ্ছন্দ্যময় সিটি গড়তে চাই।’
বহু দিনের পুরনো শহর বলে পরিকল্পনামাফিক অনেক কিছু হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন উত্তরাধিকার সূত্রে রাস্তাগুলো পেয়েছে। তবে যে ইউনিয়নগুলো নতুন করে ঢাকা সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, সেগুলোকে আধুনিকভাবে সাজানো হচ্ছে। প্রশস্ত রাস্তার একপাশ দিয়ে ইউটিলিটি সার্ভিসগুলো গেছে। এগুলো মেরামতের সময় রাস্তা খোঁড়া লাগবে না। কাউকে দোষারোপ করে লাভ নেই। দেশ আমাদের সবার।’

No comments

Powered by Blogger.