কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ করবে ভুটান, তালিকায় অস্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়া

মতপার্থক্যের পরও কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভুটানের সরকার ও বিরোধী দলের অবস্থান একই।
সাবেক সরকারের পাঁচ বছরের আমলে কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের বিষয়টি পুরোপুরি হিমাগারে ছিলো। এবার প্রধানমন্ত্রী তার স্টেট অব দ্য নেশন রিপোর্টে অন্তত নতুন একটি দেশে দূতবাস বা কনস্যুলেট স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে শেরিংয়ের ঘোষণা ছিলো নীতির পরিবর্তন। বিদেশে বসবাসকারী ভুটানিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এর প্রয়োজনীয়তাও বেড়েছে। তাছাড়া, প্রধানমন্ত্রী আরো ঘোষণা দেন যে সরকার দুটি দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।
৫ জুলাই এক সাংবাদিক সম্মেলনে সরকারের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানায় বিরোধী দল।
বিরোধী নেতা পেমা গিয়ামসো (পিএইচডি) বলেন, আমরা নীতিগতভাব খুশি এই জন্য যে সরকার আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ করছে এবং এটাই হওয়া উচিত। নীতি হিসেবে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সবার স্বাগত জানানো উচিত বলে তিনি মনে করেন।
তবে ভুটান কোন দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় প্রধানমন্ত্রী সেগুলোর নাম বলেননি। সরকারের পক্ষ থেকে সন্দেহ নিরসন করা না হলেও তালিকার শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়া রয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বিরোধী দলের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক ফোকাল পার্সন, বারতসাশ সংপু থেকে নির্বাচিত এমপি পাসাং দর্জি বলেন, অন্তত পাঁচটি দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। তিনিও দেশগুলোর নাম উল্লেখ করেননি।
দর্জি বলেন, এখন আমরা বলি যে ৫৩টি দেশের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু ইইউকে বাদ দেয়া হলে সম্পর্ক রয়েছে আসলে ৫২টি দেশের সঙ্গে।
এমপি বলে, ভুটানের একটি স্থায়ী পররাষ্ট্রনীতি রয়েছে। আর তাহলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি দেশের কারো সঙ্গে তার কূটনৈতিক সম্পর্ক না রাখা। কিন্তু দেশটি অন্য কোন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না তেমন কোন স্থায়ী নীতি নেই।
পাসাং দর্জি আরো উল্লেখ করেন যে যত বেশি সংখ্যক দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে তত ভালো হবে। তিনি ভূরাজনৈতিক স্পর্শকাতর বিষয়গুলো এবং প্রতিষ্ঠিত পররাষ্ট্র নীতির কার্যক্রমগুলো বিবেচনায় নেয়ার বিষয়টি মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, আমরা কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত সমর্থন করি।
বর্তমান বিরোধী দলটি সরকারে থাকাকালে কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারলকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয় এবং সেক্ষেত্রে ‘সফট পাওয়ার’ প্রয়োগ করা হয়। এমন কি তখন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী আসন পর্যন্ত চাওয়া হয়েছিলো। তবে ভুটান ভোটাভুটিতে হেরে যায়।
তবে দ্বিতীয় নির্বাচিত সরকার ওই নীতি থেকে সরে যায়। তাদের যুক্তি ছিলো দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের অনুকূল নয়। ভুটানের সঙ্গে যেসব দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আগে থেকেই ছিলো সেগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক সুসংহত করার দিকে সরকার মনযোগ দেয়।

No comments

Powered by Blogger.