দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আজ -বেইজিং-এ প্রধানমন্ত্রী

চীনের ডালিয়ানে দাভোস সম্মেলন শেষে বেইজিং পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল দালিয়ান ঝৌশুজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসা প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী চীনা বিমানটি দুপুরে বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বেইজিং বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয় এবং ছোট একটি শিশু ফুলের তোড়া দিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানায়। এ সময় চীনের সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে দিয়ায়োতাই স্টেট গেস্ট হাউজে নেয়া হয়। চীনের রাজধানীতে সফরকালে শেখ হাসিনা এখানেই অবস্থান করবেন। ডালিয়ানে ২রা জুলাই ডব্লিউইএফ সম্মেলনে যোগদান ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ডব্লিউইএফ’র প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস সোয়াবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং ‘কো-অপারেশন ইন দ্যা প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। ৩রা জুলাই প্রধানমন্ত্রী বেইজিং ভিত্তিক চীনের কেন্দ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলের অংশ এবং চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক গ্রুপের আন্তর্জাতিক ইংরেজী ভাষার চ্যানেল সিজিটিএনকে সাক্ষাৎকার প্রদান করেন।
সেইসঙ্গে লেজেনডেল হোটেল ওয়াংফুজিং’তে প্রবাসী বাংলাদেশীদের আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা ও নৈশভোজে যোগ দেন। আজ চীনের প্রধানমন্ত্রী লী কেকিয়াংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। দিনের শুরুতে তিনি একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন এবং গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ বীরদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। পরে তিনি চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন এবং গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এখানে ঢাকার সঙ্গে বেইজিংয়ের বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতামূলক একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ চীনের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত এক ভোজসভাতেও যোগ দেবেন। একই দিন বিকেলে তিনি সিসিপিআইটিতে চীনের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একটি বিজনেস রাউন্ডটেবিলে অংশ নেবেন। আগামীকাল ৫ই জুলাই দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
বিকালে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দিয়ায়োতাই রাষ্ট্রীয় অতিথিশালায় হাই প্রোফাইল ওই বৈঠক হবে। একই স্থানে চীনা প্রেসিডেন্টের আয়োজিত একটি ভোজ সভায়ও যোগ দেবেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান। দিনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের থিংক ট্যাংক ‘পাঙ্গোয়াল ইনস্টিটিউশন’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন। চীনের বিভিন্ন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণেরও তার সঙ্গে গেস্ট হাউসে দেখা করার কথা রয়েছে। ওই দিনে এনপিসি’র চেয়ারম্যান লি ঝাংশুর সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রীর একটি বৈঠক হবে বলে জানানো হয়েছে। চীন সফর শেষে ৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা। উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আগেই জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে রোহিঙ্গা সমস্যাটি আলোচনায় সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে। এ সঙ্কটের ভুক্তভোগী বাংলাদেশ বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ উপায়ে তাদের জন্মমাটি মিয়ানমারের রাখাইনে ফেরৎ পাঠাতে চীনের সহযোগিতা চাইবে। ঢাকা আশা করে প্রত্যাবাসনসহ রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বেইজিং কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এছাড়া দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারে দুই দেশের মধ্যে নতুন ৮টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

No comments

Powered by Blogger.