'ইয়াবা ভুট্টোর' বাড়ি-সম্পদ জব্দই থাকবে

দু’টি বিলাসবহুল বাড়িসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করে কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের দেয়া নির্দেশ বাতিল চেয়ে কক্সবাজারের ইয়াবা ব্যবসায়ী নুরুল হক ওরফে ভুট্টোর আবেদন সরাসরি খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর ফলে তার বাড়ি ও সম্পদ জব্দই থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। নুরুল হক ভুট্টোর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন প্রবীর রঞ্জন হালদার। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রব।
মানি লন্ডারিংয়ের এক মামলায় পুলিশের আবেদনে সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত এক আদেশে ভুট্টোর পরিবারের সম্পদ জব্দ করার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশে পুলিশ মামলায় বর্ণিত সম্পদ জব্দ করে। সেই থেকে এই সম্পদ জব্দ করা অবস্থায় রয়েছে।
পরবর্তীতে গত ১৬ জুন হাইকোর্টে এ আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে সম্পদ জব্দের বিষয়ে কক্সবাজার আদালতের আদেশ স্থগিত চাওয়া হয়। একইসঙ্গে কক্সবাজার আদালতের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।
১৯ জুন আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২৫ জুন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। মানি লন্ডারিং মামলায় সিআইডির তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞের মত জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। এজন্য বিশেষজ্ঞদের আদালতে হাজির করতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এ আদেশ অনুসারে বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রব।
আদেশের পর আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আবেদন সরাসরি খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। ফলে তার বাড়ি সম্পদ জব্দ থাকবে। এছাড়া বিশেষজ্ঞ মতামতে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ২০১৯ সালের একটা রুলস হয়েছে। সেটা অনুসারে এ মামলায় সিআইডি তদন্ত করতে পারবে।
১৯ জুন আমিন উদ্দিন মানিক জানিয়েছিলেন, মানি লন্ডারিং আইনে করা নারায়ণগঞ্জের একটি মামলায় তদন্তকালে নুরুল হক ভুট্টোর অবৈধ সম্পদের তথ্য পায় আইন-শৃংখলা বাহিনী। এরপর তদন্তে নেমে ভুট্টোর মাদক ব্যবসা ও সম্পদের পাহাড়ের তথ্য পায়। সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম (ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াড) এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট টেকনাফ থানায় নুরুল হক ভুট্টো, তার বাবা, স্ত্রী, ভাইসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
একইদিন পুলিশ নুরুল হক ভুট্টোকে গ্রেফতার করে। পরে তিনি গতবছর ২৮ মার্চ হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। এরপর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দীর্ঘদিন নিম্ন আদালতে স্বশরীরে হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দাখিল করেন। এছাড়াও এ মামলার আসামি নুর মোহাম্মদকে (ভুট্টোর ভাই) গত ২১ মার্চ গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন তিনি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

No comments

Powered by Blogger.