তাড়াশে নেশা করতে বাধা দেয়ায় শিক্ষককে মারধর

বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নেশা করতে বাধা দেয়ায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এক শিক্ষককে মারপিট করেছে একই বিদ্যালয়ের ছাত্র ও তার স্বজনরা। আহত আইয়ুব আলী ওই বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক। অভিযুক্ত ছাত্র সাব্বির হোসেন ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ও উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের বিপাচান গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। উপজেলার রঘুনিলী মঙ্গলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, শিক্ষককে মারপিটের ঘটনায় অর্ধ-বার্ষিক ও প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরীক্ষায় অংশ নেন তারা। আহত শিক্ষক আইয়ুব আলী অভিযোগ করে বলেন, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির হোসেন শ্রেণি কক্ষে এবং বিদ্যালয় মাঠের মধ্যে প্রতিনিয়ত (ড্যান্ডি) নেশা করে। তার সহপাঠী শ্রী শিবনাথের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার সাব্বিরকে বিদ্যালয়ে ডেকে শাসন করার সময় সে তর্কে জড়িয়ে পড়লে একটা থাপ্পড় মারা হয়।
এরই জের ধরে মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ে আসার পথে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী সাব্বির, তার ভাই রাব্বি, চাচা আলাউদ্দিন এবং রাব্বি’র বন্ধু কামরুল ইসলাম উলিপুর বিপাচান ব্রিজ এলাকায় পথ আটকে তাকে কিল-ঘুষি মারে। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ অবস্থায় সাব্বির ও তার স্বজনরা সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শ’ শ’ শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সামনেই আবারো শিক্ষক আইয়ুব আলীকে স্টিলের স্কেল দিয়ে পিটিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী শিবনাথ, আসিফ, রাজু, ইব্রাহিম, রাবেয়া ও মরিয়ম খাতুন বলেন, বিদ্যালয় চলাকালীন বিদ্যালয় মাঠের মধ্যে প্রবেশ করে গণিত শিক্ষককে মারপিট করতে থাকলে প্রতিবাদের মুখে সাব্বির ও তার স্বজনরা পালিয়ে গেছে।
রঘুনিলী মঙ্গলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবি উজ্জামান নান্নু বলেন, ঘটনার সময় তিনি লাইব্রেরিতে বসে ছিলেন। বাইরে বিশৃঙ্খলার বিষয়টি টের পেয়ে তিনি পুলিশে খবর দেন। 
তাড়াশ থানা ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফরহাদ হোসেন জানান, আহত শিক্ষককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন বলেন, একজন শিক্ষককে মারপিট করা দুঃখজনক ও নিন্দনীয় অপরাধ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.