রিকশা চালিয়ে পড়াশোনার খরচ যোগায় কাওসার

যে বয়সে হাতে থাকার কথা বই খাতা কলম আর অন্য ছাত্রছাত্রীদের মতো খেলাধুলা করার কথা সে বয়সে দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে  রিকশা চালিয়ে ও নিজের পড়াশোনার খরচ যোগায় ৯ম শ্রেণির ছাত্র কাওসার। সকালে ২ ঘণ্টা বিকালে ৪ ঘণ্টা রিকশা চালায় ১৩ বছরের শিশু মো. কাওসার (১৩)। পিতার নাম মো. ইব্রাহিম। গ্রামনাচনাপাড়া আমতলী সদর ইউনিয়ন। সে আমতলী সদর ইউনিয়নের মানিকঝুড়ি মাহমুদিয়া দাখিল মাদরাসার ৯ম শ্রেণির ছাত্র। সোমবার সকালে আমতলী নুতন বাজার বাধঘাট বটতলা থেকে  প্রেস ক্লাবে  আসার পথে কথা হয় কাওসারের সঙ্গে। কাওসার জানায়, পিতা ইব্রাহিম মা শাহিনুর বোন ফারজানা ও কাওসারকে নিয়ে চার জনের সংসার। চারজনের সংসারে উপাজনক্ষম পিতা ইব্রাহিম।
দিন মজুর রিকশা ও ইটখলায় কাজ করে পরিবারের ব্যয়বার বহন করেন। জমিজমা বলতে ৪ শতক বাড়িঘরসহ। বর্তমানে কাওসারের পিতা আমতলীর একটি ইটভাটায় কাজ করেন। গত ২-৩ মাস আগে হঠাৎ ইব্রাহিম অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ হয়ে পরায় পরিবারের সদস্যরা  অনাহারে দিনাতিপাত করতে থাকে। এমনি সময়ে মানিকঝুড়ি দাখিল মাদরাসার ৯ম শ্রেণির ছাত্র কাওসার পরিবারের খাবার ও নিজের পড়াশোনার খরচের জন্য রিকশার হ্যান্ডেল ধরে। সকালে বিকাল ও রাতে  ৬ ঘন্টা রিকশা চালিয়ে যে টাকা আয় করে সেই টাকা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের খাবার ও নিজের পড়াশোনার খরচ যোগাড় করেন।  আমতলীর মানিকঝুড়ি দাখিল মাদরাসার সুপার তত্ত্বাবধায়ক মাওলানা মো. আবু তাহের বলেন কাওসার একজন ভালো ছাত্র ও অষ্টম শ্রেণির জেডিসি পরীক্ষায় ৪.৩৯ পেয়েছে। সে নিয়মিত ক্লাসে আসে। ওর কাছ থেকে আমরা মাদরাসা কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার টাকা পয়সা নেই না। ও যেভাবে রিকশা চালিয়ে পড়ালেখা করেন এ যুগে  এ রকম ছেলে খুঁজে পাওয়া যাবে না।  আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আকমল হোসেন বলেন  খোঁজ নিয়ে  কাওসারকে  সার্বিক সুযোগ সুবিদা দেয়া হবে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সরোয়ার হোসেন বলেন খোঁজ নিয়ে সরকারিভাবে সুযোগ সুবিধা নেয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.