বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিঃ উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরার ফোনালাপের ব্যাপারে কথা বলেছেন সংস্থাটির মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক। বলেছেন, আমি মনে করি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক স্পেইসের ব্যাপারে আমরা উদ্বেগ জানিয়েছি। মহাসচিব ফোন করেছিলেন এবং কথা বলেছেন। এতে রোহিঙ্গা ইস্যু গুরুত্ব পেয়েছে। আর আমি মনে করি লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ায় মহাসচিব পুনরায় বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বর্ষাকাল এগিয়ে আসায় উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, আশ্রয় শিবিরগুলোর ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না-ও হতে পারে। নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কাজ করছে। নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডুজাররিক এসব কথা বলেন। তার কাছে প্রশ্ন করা হয়- বাংলাদেশের মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে মহাসচিব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছেন এবং তারা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন। আরো জানতে চাওয়া হয়, মহাসচিব কী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনো আলোচনা করেছেন, যখন বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলের নেত্রী কারাগারে এবং তিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন। এ ছাড়া, বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও সেখানকার নিরাপত্তা অবস্থার কারণে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে অনিচ্ছুক হওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ডুজাররিকের কাছে। তাকে প্রশ্ন করা হয়, মিয়ানমারের মন্ত্রী বাংলাদেশে আসার পর থেকে সে বিষয়ে জাতিসংঘ নতুন কিছু জানে কিনা। উত্তরে ডুজাররিক বলেন, না, মানে, আমরা বিভিন্ন প্রতিবেদন দেখেছি। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে যে, শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন স্বেচ্ছাকৃত হতে হবে। এটা মর্যাদাপূর্ণ হতে হবে। তাদের নিজেদের বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা থাকতে হবে। যেখান থেকে তারা এসেছে। অন্য কোনো জায়গায় না, যেখানে তাদেরকে যেতে বাধ্য করা হবে। এই অবস্থানের নীতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এরপর রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। ডুজাররিককে প্রশ্ন করা হয়- রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়ে জাতিসংঘ মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলেছে কি না, যে নাগরিকত্ব তাদের এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি। জবাবে ডুজাররিক বলেন, এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের জন্য আমাদের অবস্থান হচ্ছে (কফি) আনান কমিশনের সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন।
এদিকে, এই মাসের শেষের দিকে একটি তথ্য অনুসন্ধানী অভিযানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর করবেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। ২৬শে এপ্রিল থেকে ২রা মে পর্যন্ত এই সফর করবেন তারা। এ সময় রোহিঙ্গা সংকট গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন তারা। এ বিষয়ে ডুজাররিক বলেন, এটি আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগ পুনরায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশা ও এই মানবিক অভিযান অব্যাহত রাখার জন্য প্রতিনিয়ত প্রয়োজনীয় তহবিলের দিকে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে।

No comments

Powered by Blogger.