লন্ডনে আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠান: সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চাইলেন বৃটিশ প্রতিমন্ত্রী

লন্ডনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন দেখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন বৃটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড এমপি। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন, আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সরকারি কনজারভেটিভ পার্টি, বিরোধী লেবার পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস, স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন দলের ৬৩ বৃটিশ এমপির উপস্থিতিতে (ভিজিট বুকে সইকারী) অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড বলেন, কক্সবাজারের মতো জনবহুল এলাকার মানুষ নিজেদের কষ্ট অগ্রাহ্য করে লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র। বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ‘দূরদর্শী নেতৃত্ব বিশ্ব সভায় সমাদৃত’ উল্লেখ করে কনজারভেটিভ পার্টির ওই নেতা আশা করেন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এবং এখানে সব দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতন্ত্র আরো সমৃদ্ধ হবে। গত মঙ্গলবার হাউস অব কমন্সে দি টেরেস প্যাভিলিয়নে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানটি হয়। সেখানে স্বাগত বক্তব্যে লেবার পার্টির এমপি জিম ফিজপেট্রিক ‘স্বাধীনতার সূচনা থেকে বাংলাদেশ বৃটেনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ উল্লেখ করে বলেন- স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এত বিশাল সংখ্যক বৃটিশ এমপি উপস্থিত হয়েছে, যা অন্য অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। অনুষ্ঠানে সরকারদলীয় আরেক এমপি অ্যান মেইন বলেন, মাত্র ৪৭ বছরে বাংলাদেশ যে উন্নয়ন করেছে, তা সত্যিই অকল্পনীয়। শেখ হাসিনার ভূমিকার স্বীকৃতি দেয়া উচিত। সারা বিশ্বকে বাংলাদেশের মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে তাদের সক্ষমতা। এডিনবরার বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রশংসা এবং বৃটেনে বাংলাদেশিদের অভিবাসন সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়টি তুলে ধরেন স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির এমপি জোয়ানা চেরি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করেন স্টিভেন স্টিংস এমপি। বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তার ভূয়সী প্রশংসা করেন লিস ম্যাকানিজ এমপি। বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সেটা আবার প্রমাণ করেছে বাংলাদেশের মানুষ। একাত্তরে পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু মুক্ত হওয়ার পর লন্ডন হয়ে দেশে ফেরার ঘটনা স্মরণ করে তাৎকালীন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাডোয়ার্ড হিথের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা নিয়ে দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বড় পর্দায় বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে নাচও পরিবেশন করা হয়। এ সময় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া বৃটিশ এমপিদের হাতে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচার ইংরেজি সংস্করণসহ বাংলাদেশের উন্নয়নের বিভিন্ন পরিসংখ্যান সংবলিত তথ্য তুলে ধরা হয়। এমপিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্যাডো সেক্রেটারি অব স্টেট  ডেভি আব্রাহাম, পার্লামেন্টারি আন্ডার  সেক্রেটারি মাইকেল এলিজ, শ্যাডো মিনিস্টার চি অনুরাহ, শ্যাডো লিডার অব দ্য হাউস অফ কমন্স ভ্যালেরি ভাজ, শ্যাডো সেক্রেটারি অব স্টেট জনাথন আশওয়ার্থ, শ্যাডো মিনিস্টার জুলিয়ে কুপার, শ্যাডো মিনিস্টার ফ্যাবিয়ান হ্যামিল্টন ও শ্যাডো চ্যান্সেলর অব এক্সচেকার জন ম্যাকডনাল প্রমুখ। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জালাল উদ্দিন, সৈয়দ  মোজাম্মেল আলী, মারুফ আহমদ  চৌধুরী, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাজ্জাদ মিয়া, আব্দুল আহাদ চৌধুরী, শাহ শামীম আহমদ, মাসুক ইবনে আনিস, রবিন পাল, সরাব আলী, আসম মিসবাহ ও মেহের নিগার চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন সংগীতা আহমেদ ও সৈয়দা সায়মা আহমদ।

No comments

Powered by Blogger.