‘তুমি আমার কাছে স্পেশাল’

কান্নায় ভেঙে পড়লেন প্লেবয়ের সাবেক মডেল কারেন ম্যাকডুগাল। তিনি বললেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার ১০ মাসের যৌন সম্পর্ক ছিল। প্রথমবার কারেনের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন ট্রাম্প। এরপরই তিনি তাকে অর্থ প্রস্তাব করেন। কারেন বলেন, তখন ভীষণভাবে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম আমি। ট্রাম্পকে আমি ভীষণ ভালোবাসতাম। বিশ্বাস করতাম তিনিও আমাকে ভালোবাসেন। এক সময় আমাকে বিয়ে করবেন। যদিও তখন তার স্ত্রী মেলানিয়া ঘরে। তাদের ঘরে জন্ম নিয়েছে একটি ছেলে। যুক্তরাষ্ট্রের সিএনএন টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বর্ণনা দিয়েছেন কারেন ম্যাকডুগাল। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে অনেক নারী যৌন সম্পর্ক বা যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন। তারা বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তিনি ওই সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। তাদের মধ্যে কারেন ম্যাকডুগাল অন্যতম। এসব নারীর ভেতর থেকে তিনিই প্রথম সাক্ষাৎকার দিলেন এবং বললেন বিস্তারিত কাহিনী। তার কথামতো, এখন থেকে এক যুগেরও বেশি সময় আগে ট্রাম্পের সঙ্গে তার ওই যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ১৯৮৮ সালে প্লেবয় প্লেমেট অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হন কারেন ম্যাকডুগাল। তার আনা এসব অভিযোগ বার বারই জোর দিয়ে অস্বীকার করেছে হোয়াইট হাউস। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, কারেন ম্যাকডুগালের সঙ্গে তার কোনো শারীরিক সম্পর্ক ছিল না। তবে এ নিয়ে মিস ম্যাকডুগাল তার কাহিনী বলেছিলেন একটি ম্যাগাজিনকে। কিন্তু তা প্রকাশিত হয় নি কখনো। এবার তিনি সব খুলে বলেছেন সিএনএনকে। তিনি বলেছেন, একবার লস অ্যানজেলেসে প্লেবয় মাস্টার হিউ হেফনারের প্লেবয় ম্যানশনে টেলিভিশন সিরিজ ‘সেলিব্রেটি অ্যাপ্রেন্টিস’-এর একটি অংশের শুটিং করছিলেন ট্রাম্প। সেখানেই তার সঙ্গে প্রথম পরিচয় কারেন ম্যাকডুগালের। এ সময় পুলের পাশে একটি পার্টি হচ্ছে এমন দৃশ্যে গ্লামার ছড়াতে কিছু প্লেবয় মডেলকে ভাড়া করা হয়। তখন ম্যাকডুগাল ছিলেন ৩৫ বছর বয়সী এবং অবিবাহিত। আর ট্রাম্প ছিলেন ৬০ বছরের। ওই অনুষ্ঠানে ডেকে নেয়া হয়েছিল ম্যাকডুগালকেও। এর এক বছরের কিছু বেশি সময় আগে মেলানিয়া ট্রাম্পকে বিয়ে করেছেন ট্রাম্প। আর মেলানিয়া ওই প্লেবয় ম্যানশনের এই ঘটনার তিন মাস আগে পুত্র ব্যারনের জন্ম দিয়েছেন। প্লেবয় ম্যানশনে রাতের অন্ধকার নামতে থাকে। এ সময় কারেন ম্যাকডুগাল ও অন্যরা নিশ্চিত হয়ে যান, তার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন ট্রাম্প। কারেন বলেন, আমি তার দিকে তাকিয়ে হাসলাম। মনে হয়েছিল এটা খুব মহা একটা বিষয়। আনন্দের। ট্রাম্প ছিলেন ব্রিলিয়ান্ট আর খুব স্মার্ট। আমি এমন পুরুষকে পছন্দ করি।
এরপর তারা দু’জনে আড্ডা মারতে থাকেন। গল্প চলতে থাকে রাতের আঁধারের সঙ্গে সঙ্গে। শেষ রাতের দিকে তারা দু’জন দু’জনের ফোন নাম্বার একে অন্যকে দিলেন। তবে ট্রাম্পের ফোন নম্বর কখনো কারেন ম্যাকডুগালের ফোনে দেখা যেতো না। কারণ, ট্রাম্প তার পরিচয় গোপন করেছিলেন। তারপরের সপ্তাহ তারা নিয়মিত ফোনে কথা বলতে লাগলেন। ২০০৬ সালের জুনে লস অ্যানজেলেসে গেলেন ট্রাম্প। সেখানে তাদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা হলো। প্রথম ওই ডেটিংয়ে ম্যাকডুগালকে ট্রাম্প বললেন, তার দেহরক্ষী কিথ শিলার তাকে তুলে নেবেন। রাতের খাবারের জন্য পৌঁছে দেবেন বেভারলি হিলস হোটেলে। এতে বিস্মিত হন ম্যাকডুগাল। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ওই হোটেলে। সেখানে তারা একসঙ্গে নৈশভোজ সারেন। এই রাতেই তারা অন্তরঙ্গ সম্পর্কে লিপ্ত হন। ম্যাকডুগাল বলেন, তার প্রতি আমি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিলাম। দেখতে তিনি একজন চমৎকার মানুষ। তার মধ্যে ক্যারিশমা আছে। আছে মহৎ এক অভিব্যক্তি। এ ঘটনার পর তিনি আমাকে অর্থ দিতে চাইলেন। আমি বুঝতে পারি নি কীভাবে আমি এর বিনিময়ে ওই অর্থ নেবো। এটা এক লজ্জার বিষয়। আমি তার দিকে তাকালাম। বললাম, আমার অর্থের প্রয়োজন নেই। আমি ওই রকম মেয়ে নই। তিনি আমার এ কথায় বললেন- তুমি আমার কাছে স্পেশাল। জবাবে আমি বললাম, ধন্যবাদ।
এরপর ট্রাম্পের দেহরক্ষী গাড়িতে করে নিয়ে তাকে তার বাড়ি পৌঁছে দেন। সাক্ষাৎকারে এ কথা বলতে বলতে কারেন ম্যাকডুগাল কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, আমি এতটাই খারাপ ছিলাম। এটা আমাকে আহত করে। কিন্তু সত্যি হলো আমি সেখানে গিয়েছিলাম।
এরপরে ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি আর সাক্ষাৎ করতে চান নি। কিন্তু তার কথামতে, ট্রাম্পই তাকে বার বার ফোন করতেন। এভাবেই তাদের মধ্যে ১০ মাসের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

No comments

Powered by Blogger.