সুচির পদক বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্রের জাদুঘর

অং সান সুচিকে দেয়া সর্বোচ্চ সম্মাননা এবার বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি জাদুঘর। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর নৃশংসতা থামাতে ব্যর্থ হওয়া ও এর নিন্দা জানাতে তার ব্যর্থতার কারণে ওই সম্মাননা কেড়ে নেয় ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম। বুধবার ওই জাদুঘর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, অং সান সুচিকে ‘ইলি উইসেল অ্যাওয়ার্ড’ দিয়েছিল ওয়াশিংটনের ওই জাদুঘর। কিন্তু তা বাতিল করেছে বা কেড়ে নিয়েছে জাদুঘরটি। এটাই প্রথম নয়, সুচিকে দেয়া এমন আরো অনেক পদক, সম্মাননা কেড়ে নিয়েছে বৃটেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সিটি কাউন্সিল। এর মধ্যে গত বছরের ২৫শে নভেম্বর ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড শহরের সিটি কাউন্সিলররা রোহিঙ্গা ইস্যুতে নীরব থাকায় সুচির কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন ফ্রিডম অফ দ্য সিটি পুরস্কার। গ্লাসগো সিটি কাউন্সিল ২০০৯ সালে সুচিকে পুরস্কৃত করতে চেয়েছিল ‘ফ্রিডম অফ গ্লাসগো’ পুরস্কারে। তবে  ৩রা নভেম্বর গ্লাসগো সিটি কাউন্সিল ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে নেয়। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধীন আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কলেজ সেইন্ট হিউ’র ‘জুনিয়র কমন রুম’ থেকে তার নাম সরিয়ে ফেলা হয়। এছাড়া, অন্যান্য আরো সম্মাননা কেড়ে নেয়া হয়েছে। তার নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়ার জন্য বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ করা হয়েছে।
এসবের পেছনে কারণ ছিল, তিনি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতায় নিন্দা পর্যন্ত জানান নি। তিনি পক্ষ নিয়েছেন তার দেশের নিষ্পেষণকারী সেনাদের। যাদের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন ও বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্রে নৃশংসতার অভিযোগ আনা হয়েছে। তারা নির্বিচারে নারী ও বালিকাদের ধর্ষণ করেছে। গণহারে হত্যা করেছে। পুড়িয়ে দিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। এসব ঘটনা প্রামাণ্য আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। তারপরও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এ অভিযোগ অস্বীকার করে। আর তাদের সঙ্গে সুর মিলান সুচি। ওদিকে জাতিসংঘের তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন অং সান সুচি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি। এর ফলে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা, ঘৃণা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেসব এলাকায় নৃশংসতা হয়েছে, নির্যাতন হয়েছে সেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া   হয় নি। নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক চিঠিতে অং সান সুচির প্রতি এসব কথা লিখেছে ওয়াশিটনের ওই জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। ৬ই মার্চ পোস্ট করা ওই চিঠিতে বলা হয়, আমরা পুরস্কার কেড়ে নিচ্ছি এটা বেদনার। আমরা সহজে এমন সিদ্ধান্ত নিই না। ওদিকে ওয়াশিংটনে অবস্থিত মিয়ানমার দূতাবাসের কোনো কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য পাওয়া যায় নি।

No comments

Powered by Blogger.