নারী দিবসে রাজপথে স্পেনের নারী কর্মীরা

‘আমরা বন্ধ করলেই-সবাই বন্ধ করবে’ স্লোগানে মুখর স্পেন। দেশটির নারী শ্রমিকরা আন্তর্জাতিক নারী দিবসে লিঙ্গ বৈষম্য এবং অসমতার বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টাব্যাপী আন্দোলনে নেমেছেন। বৃহস্পতিবার তারা কাজে যোগ দেবেন না। আন্দোলনটির আয়োজন করেছে এইট মার্চ কমিশন। সমর্থন জানিয়েছে আরো ১০টি ইউনিয়ন ও স্থানীয় শীর্ষ নারী রাজনীতিবিদরা। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, আন্দোলনের অংশ হিসেবে নারীরা কর্মক্ষেত্রে যোগ দেবেন না, কোনো অর্থ খরচ করবেন না। এমনকি গৃহস্থালী কাজকর্ম থেকেও বিরত থাকবেন। দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আন্দোলনের কারণে বৃহস্পতিবার প্রায় ৩০০ ট্রেন বন্ধ রয়েছে মাদ্রিদজুড়ে। এ ছাড়া, পাতাল পরিবহন ব্যবস্থাতেও বিঘ্ন ঘটেছে। পুরো দেশজুড়ে মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, বিলবাও, ভ্যালেনসিয়াসহ প্রায় দু’শতাধিক স্থানজুড়ে আন্দোলনে নেমেছেন নারীরা। আন্দোলনকারীদের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সমাজ হবে যৌন সহিংসতা, শোষণ এবং নিপীড়ন মুক্ত’। এর পাশাপাশি আন্দোলনকারীরা দাবি তুলছেন ‘তারা নিম্নমানের পরিবেশে কাজ করব না। এমনকি পুরুষদের তুলনায় কম বেতনেও না’।
স্থানীয় পত্রিকা এল পাইস এক প্রতিবেদনে বলেছে, আন্দোলনের কারণে অধিকাংশ খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পত্রিকাটির এক জরিপে অংশ নেয়া ১ হাজার ৫০০ ব্যক্তির ৮২ শতাংশই এই আন্দোলন সমর্থন করেছেন। এ ছাড়া, ৭৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, স্পেনে নারীদের জীবন পুরুষদের তুলনায় কঠিন।
 নারীবাদী সংগঠনগুলো চায় নারীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাক। যাতে করে কর্মক্ষেত্রে তাদের উপস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝানো যায়। প্রসঙ্গত, স্পেনে একক-লিঙ্গ ভিত্তিক আন্দোলন আইনবহির্ভূত। তবে, এ ধরনের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানালে আইন লঙ্ঘন হয় না।
অনেকে অবশ্য আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে। মধ্য-ডানপন্থি রাজনৈতিক দল পারটিডো পপুলার (পিপি) বলেছে, এই আন্দোলন শুধুমাত্র অভিজাত নারীবাদীদের জন্য। এতে সব শ্রেণির নারীদের প্রাত্যহিক সমস্যার কথা বলা হচ্ছে না। তবে, দেশটির রক্ষণশীল সরকারের পাঁচ জন নারীমন্ত্রীর মধ্যে দুই জন-কৃষি বিষয়ক মন্ত্রী ইসাবেল গারসিয়া তেজিরিনা এবং মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা সিফুয়েন্টাস জানিয়েছেন, তারাও আন্দোলনকারীদের মতো একদিন কাজে যোগ দেবেন না। এ ছাড়া, অভিনেত্রী পেনেলোপি ক্রুজ তার পূর্ব পরিকল্পিত অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন এবং জানিয়েছেন তিনি তার নিজ শহরে ফিরে আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করবেন। মাদ্রিদ মেয়র ম্যানুয়েল কারমেন এবং বার্সেলোনা মেয়র অ্যাডা কোলাও আন্দোলনে সমর্থন প্রকাশ করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.