দুর্বৃত্তের আগুনে জ্বলছে পাহাড়

টেকনাফে দুর্বৃত্তের আগুনে একশত একর সামাজিক বনায়ন ও পশু খাদ্য বাগান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। টেকনাফ উপজেলার পৌরসভা সংলগ্ন নুর আহমদ ঘোনা, নাইট্যংপাড়া ও বিজিবি সংলগ্ন পাহাড়সহ অন্তত ৪০টি পয়েন্টে ৮ই মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আগুনের এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকায় আগুন মুহূর্তে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। আগুনে লাখ লাখ চারাগাছ, বন্য প্রাণীসহ শত শত উপকারভোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
খবর পেয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় চাকমা ও রেঞ্জ কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন পাহাড়ে ছুটে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় ভিলেজার, সামাজিক বনায়নের অংশীদার ও দমদমিয়া ন্যাচার পার্ক বন পাহারা দলের সদস্যদের দিয়ে চেষ্টা করছেন। বিকাল ৪টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হয়নি।
টেকনাফ উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, হঠাৎ করে সকালের দিকে দুর্বৃত্তরা পাহাড়ের ৪০টি পয়েন্টে আগুন দিয়েছে। এতে ২০১৫-১৬ সালে সৃজিত সামাজিক বনায়নের ৭৫ একর ও ২৫ একর পশু খাদ্য বাগানসহ প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা হাজার চারাগাছ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্য পশু-পাখি ও উপকার ভোগীরা। কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় চাকমা জানিয়েছেন, দুর্বৃত্ত্বের আগুন প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা গাছ পালা পুড়ে গেছে। পাশাপাশি সৃজিত বাগান ও পশু-পাখিদের  আভাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাতাসে তীব্রতা বেশি থাকায় আগুন নেভানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে বনকর্মীদের দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যারা পাহাড়ে আগুন ধরিয়েছে তাদের খোঁজ নিয়ে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। 
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান জানান, পাহাড়ের পাদদেশে বসতি রয়েছে। আগুনের কবল থেকে এসব ঘরবাড়ি রক্ষা এবং মানুষের জানমাল নিরাপত্তার স্বার্থে ফায়ার সার্ভিসসহ স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেহেতু আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে তা নিভানো মুশকিল। নিয়ন্ত্রণে রাখতে বনকর্মীদের সতর্কাবস্থা এবং কারা আগুন লাগিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘ বছর ধরে মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গা আবদুল হাকিম ডাকাত গহিন পাহাড়ে অবস্থান নিয়ে এলাকায় ডাকাতি, খুন-গুম ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তাকে নির্র্মূলে গত এক মাস ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা আন্দোলন ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। এমনকি উপজেলা পরিষদ ঘেঁষে পুরান পল্লান পাড়ায় ওই হাকিম ডাকাতের বসতবাড়িতে এলাকাবাসী হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাকিম ডাকাতকে তাড়াতে পাহাড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা।

No comments

Powered by Blogger.