ভারতীয় সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে ব্যয়বহুল পরিকল্পনা

ভারতীয় সেনার পদাতিক বাহিনীকে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সুসজ্জিত করতে প্রায় চল্লিশ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। পুরোনো অস্ত্রের পরিবর্তে সেনাবাহিনীর হাতে প্রচুর পরিমাণে নয়া হালকা মেশিনগান, কারবাইন ও অ্যাসল্ট রাইফেল তুলে দেয়া হবে।
সেনাবাহিনীর প্রায় ৭ লাখ রাইফেল, ৪৪ হাজার লাইট মেশিনগান এবং ৪৪ হাজার ছয়শত কারবাইন প্রয়োজন। এরমধ্যে প্রথম দফায় সেনাবাহিনীকে ১০ হাজার মেশিনগান দেয়া হবে।
সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে।
পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনাসহ অতিরিক্ত নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে দ্রুত বিভিন্ন অস্ত্র কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
একটি সূত্রে প্রকাশ, সেনাবাহিনীর কী কী অস্ত্র কত পরিমাণে লাগবে খুব দ্রুত তার একটি তালিকা অনুমোদনের জন্য ডিফেন্স অ্যাকিউজেশন কাউন্সিলের (ডিএসি) কাছে পাঠানো হবে। ডিএসি অনুমোদন দিলেই সেনাবাহিনী ওই অস্ত্রশস্ত্র হাতে পাবে।
এরআগে ইছাপুর সরকারি রাইফেল ফ্যাক্টরিতে নির্মিত অ্যাসল্ট রাইফেল গত জুন মাসে সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রত্যাখাত হয়েছিল। ওই বন্দুক ফায়ারিং পরীক্ষায় শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল।
পদাতিক বাহিনীর আধুনিকায়ন পরিকল্পনা সেনাবাহিনীর জন্য একটি বড় পদক্ষেপ এবং এরফলে বাহিনীর সামগ্রিক ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সম্প্রতি শেষ হওয়া সামরিক কমান্ডারদের সম্মেলনে ওই ইস্যুতে গভীরভাবে আলোচনা হয়। এখানে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন দেশের সামনে বর্তমান নিরাপত্তা ঝুঁকির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া উচিত বলে কর্মকর্তারা অনুভব করেন।
ওই সম্মেলনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেন, সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে রয়েছে এবং যুদ্ধ সামর্থ্যকে শক্তিশালী করতে সমস্ত ত্রুটিগুলো সমাধান করা হবে।
শক্তি বাড়লো ভারতীয় নৌবাহিনীর : এলো নতুন যুদ্ধজাহাজ
আরো সমৃদ্ধ হলো ভারতীয় নৌবাহিনী। বাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডারে নয়া সংযোজন অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কিলতান। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি চার অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজকে নৌবাহিনীতে যুক্ত করার যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, আইএনএস কিলতান তার মধ্যে তৃতীয়।
গত ১৬ অক্টোবর বিশাখাপত্তনমের নেভাল ডকইয়ার্ডে এই যুদ্ধজাহাজকে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
ইতোমধ্যেই শিবালিক ক্লাস, কলকাতা ক্লাস, আইএনএস-কামোর্তা, আইএনএস-কাদমাত ভারতীয় নৌবাহিনীকে সমৃদ্ধ করেছে। এ বার সেই তালিকায় ঢুকে পড়ল আইএনএস কিলতান। নৌবাহিনীর নিজস্ব সংস্থা ডিরেক্টরেট অফ নেভাল ডিজাইনের তৈরি নকশায় এই যুদ্ধজাহাজ তৈরি করেছে কলকাতার গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স।
আইএনএস কিলতান দেশের প্রথম কোনো যুদ্ধজাহাজ যেখানে কার্বন ফাইবারের সুপারস্ট্রাকচার রয়েছে। এর ফলে আত্মগোপন করে থাকার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। হ্রাস পাবে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ। ১০৯ মিটার দীর্ঘ এই যুদ্ধজাহাজে চারটি ডিজেল ইঞ্জিন রয়েছে। ভবিষ্যতে এটিকে এসএএম সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত করা হবে এবং এতে রাখা হবে একটি এএসডব্লিউ হেলিকপ্টার। ১৩ জন অফিসার ও ১৭৮ জন নাবিকের একটি দল আইএনএস কিলতানের দায়িত্বে থাকবেন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ভারতের হাতে রয়েছে যেসব আক্রমণাত্মক মিসাইল :
১. পৃথ্বী: এটি একটি সার্ফেস টু সার্ফেস ব্যালিস্টিক মিসাইল
পৃথ্বী-১: রেঞ্জ- ১৫০ কিমি, বহন ক্ষমতা- ১০০০ কেজি পরমাণু ওয়ারহেড
পৃথ্বী-২: রেঞ্জ- ৩৫০ কিলোমিটার, বহন ক্ষমতা- ৩৫০-৭৫০ কেজি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড
২. ধনুষ: রেঞ্জ- ৩৫০ কিলোমিটার
৩. অগ্নি: এটি একটি লং রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল
অগ্নি-১: রেঞ্জ- ৭০০ কিলোমিটার, বহন ক্ষমতা- ৭৫০-১০০০ কেজি ওয়ারহেড
অগ্নি-২: রেঞ্জ- ২০০০ কিলোমিটার, বহন ক্ষমতা- ১০০০ কেজি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড
অগ্নি-৩: রেঞ্জ- ৩০০০ কিলোমিটার, বহন ক্ষমতা- ২০০০-২৫০০ কেজি ওয়ারহেড
অগ্নি-৪: রেঞ্জ- ৩৫০০ কিলোমিটার, বহন ক্ষমতা- ৮০০-১০০০ কেজি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড
অগ্নি-৫: রেঞ্জ- ৫৫০০-৫৮০০ কিলোমিটার, বহন ক্ষমতা- ১৫০০ কেজি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড
অগ্নি-৬: রেঞ্জ- ৬০০০-৮০০০ কিলোমিটার, বহন ক্ষমতা- ১০০০ কেজি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড
৪. K সিরিজের সাবমেরিন লঞ্চড মিসাইল
K-15: রেঞ্জ- ৭৫০ কিলোমিটার
K-4: রেঞ্জ- ৩০০০ কিলোমিটার
৫. আকাশ মিসাইল: রেঞ্জ- ২৫ কিলোমিটার, বহন ক্ষমতা- ৬০ কেজি ওয়ারহেড
৬. ত্রিশুল: রেঞ্জ- ৯ কিলোমিটার, বহন ক্ষমতা- ৫.৫০ কেজি ওয়ারহেড
৭. নাগ: রেঞ্জ- ৩-৭ কিলোমিটার, বহন ক্ষমতা- ৮ কেজি অ্যান্টি-ট্যাংক ওয়ারহেড
৮. ব্রহ্মোস: রেঞ্জ- ২৯০ কিলোমিটার
সূত্র: কলকাতা২৪ ডট কম

No comments

Powered by Blogger.