ঝাড়খন্ডে মুসলিম যুবককে ঘর থেকে বের করে গুলি করে হত্যা, ৫ পুলিশ সাসপেন্ড

ভারতের বিজেপিশাসিত ঝাড়খণ্ডের পুলিশ এক মুসলিম যুবককে ঘর থেকে বের করে গুলি করা হত্যা করেছে। গতকাল (শুক্রবার) দিবাগত রাতে ঝাড়খণ্ডের চাতরায় পুলিশের গুলিতে নিহত ওই যুবকের নাম মুহাম্মদ সালমান(১৯) ওরফে রাজা।
সালমানের বাবা আব্দুল জব্বার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কয়লা খাদানে শ্রমিকের কাজ করত সালমান। শুক্রবার রাতেই সে পারিশ্রমিক পেয়েছিল। ঈদ উপলক্ষে এদিনই সে নিজের জন্য নতুন পোশাক, বেল্ট, জুতো ইতাদি কিনেছিল।
আব্দুল জব্বার বলেন, ‘রমজানের শেষ জুমার পর সকলেই ঈদের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু পুলিশ তার ছেলেকে ঘর থেকে টেনে বের করে বুকে তিনটি গুলি চালিয়েছে। তারা সালমানের অপরাধ কী জানতে চাইলেও পুলিশ কিছুই জানায়নি। তাকে ঘর থেকে প্রায় ৫০ মিটার টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।’  
আব্দুল জব্বার বলেন, ‘গুলির আওয়াজ শুনতেই আমরা সকলেই ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার ছেলে সালমান রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।’
মুহাম্মদ আসলাম নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘বিশ্বাস করুন পুলিশ অপরাধীর মত ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। কোনো মামলাও দায়ের করেনি। গুলি চালানোর পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জিপে করে পালিয়ে গেছে।’ 
ওই ঘটনার পরে আজ (শনিবার) নিহত সালমানের লাশ নিয়ে গ্রামবাসীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের ট্রিগারে হাত লেগে গুলি ছিটকে সালমানের বুকে লাগে বলে পুলিশ সাফাই দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু গ্রামবাসীদের দাবি যদি তাই হয় তাহলে আহত সালমানকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে পুলিশ পালিয়ে গেল কেন?
চাতরার পুলিশ সুপার মদন মোহনলাল আজ ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে  চাইলেও তারা কোনো কথায় রাজি হয়নি। তাদের দাবি- আগে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে তারপরেই কথা হবে। পরে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে সালমানের লাশ সড়ক থেকে সরাতে সক্ষম হন।
জেলা পুলিশ কর্মকর্তা ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পিপারওয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে  অন্যত্র বদলি এবং এক উপ-পরিদর্শকসহ ৫ পুলিশ কর্মীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত  করেছেন। তদন্তে প্রকাশ, পুলিশের উপ-পরিদর্শক প্রেম চন্দ্র মিশ্র ওই এলাকায় এক অপরাধমূলক ঘটনার তদন্তে গিয়ে তল্লাশি চালানোর সময় সালমান ওরফে রাজাকে গুলি করে হত্যা করে। পুলিশের মুখপাত্র ও আইজি আশীস কোনোভাবেই দোষী পুলিশ কর্মীদের রেহাই দেয়া হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকায় কঠোর পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.