কিমের ‘নির্দেশ পেলেই’ পরমাণু বিস্ফোরণ

কোরীয় অঞ্চলের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক অবস্থানের কারণে উত্তর কোরিয়া যে কোনো মুহূর্তে নতুন পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে পারে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে পিয়ংইয়ং। সোমবার পিয়ংইয়ং জানায়, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন যে মুহূর্তে এবং যেখানে বিস্ফোরণ চাইবেন সেই মুহূর্তে সেখানেই পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটবে। পাশাপাশি কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু যুদ্ধের প্রান্তে ঠেলে দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেছে উত্তর কোরিয়া। সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবাহিনীর সঙ্গে মহড়া দিতে দুটি মার্কিন বোমারু বিমান কোরীয় উপদ্বীপের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার পর এ অভিযোগ করে পিয়ংইয়ং। খবর সিএনএন ও দ্য গার্ডিয়ানের। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা অমান্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের চাপ অগ্রাহ্য করে উত্তর কোরিয়া তার পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। এ নিয়ে বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় দুটি সুপারসনিক বি-১বি লান্সার বোমারু বিমান মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়ার পরমাণু হুমকি মোকাবেলায় দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন করা মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী সিস্টেম থাড সচল করা হয়েছে। সিউলে এক সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুন সাং গিউন জানান, উত্তর কোরিয়ার উসকানি এবং আরেকটি সম্ভাব্য পরমাণু পরীক্ষা থেকে দেশটিকে বিরত রাখতে সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ সামরিক মহড়া চালায়।
এক বিবৃতিতে মার্কিন বিমানবাহিনী জানায়, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বিমানবাহিনীর সঙ্গে প্রশিক্ষণ মহড়ায় অংশ নিতে বোমারু বিমান দুটি গুয়াম দ্বীপপুঞ্জ থেকে সিউলে গেছে। উত্তর কোরিয়া বলেছে, বোমারু বিমানগুলো তাদের এলাকায় ‘বড় ধরনের স্থাপনায় পরমাণু বোমা হামলার মহড়া দিয়েছে। মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ বলেছে, বেপরোয়া এ সামরিক উসকানি কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতিকে একটি পরমাণু যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর আগে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে পরবর্তী পরমাণু বিস্ফোরণের বিষয়ে ইঙ্গিত মিলেছে। মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, আমেরিকা যে পথে লড়তে চায়, উত্তর কোরিয়া ঠিক সেই পথেই জবাব দিতে প্রস্তুত। কেসিএনএ সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, যতক্ষণ না ওয়াশিংটন তার আগ্রাসী নীতি ত্যাগ করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া নিজের পরমাণু হামলার সক্ষমতা আরও জোরদার করতে থাকবে। নিজেদের পরমাণু অস্ত্রাগারকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে উত্তর কোরিয়া এত দিন যেভাবে এগিয়েছে, এখনও সেভাবেই এগোবে। দেশের সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের নির্দেশ পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওই মুখপাত্র।
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন ভারতের : উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে ভারত। দেশটি পিয়ংইয়ংয়ের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান যুদ্ধাবস্থায় গত সপ্তাহে ভারত এ সম্পর্ক বিচ্ছেদের ঘোষণা দেয়। তবে ওষুধ ও খাদ্য এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে না। এছাড়া দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকবে। এই প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিল ভারত। কয়েক দশক ধরে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে ফেরাতে চেষ্টা করছে জাতিসংঘ। যুক্তরাষ্ট্রও দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

No comments

Powered by Blogger.