এ কী বললেন এফবিআই পরিচালক!

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে সব বিতর্ক ছাপিয়ে এবার তোপের মুখে মার্কিন তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) পরিচালক জেমস কমি। নির্বাচনের জন্য বাকি মাত্র দুই সপ্তাহেরও কম সময়। এর মধ্যে তিনি কংগ্রেসকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, অন্য একটি তদন্ত করতে গিয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের গোপন ই-মেইলের সন্ধান পাওয়া গেছে। তদন্তে অপরাধমূলক কিছু পাওয়ার আগেই তাঁর এমন বক্তব্যে অনেকেই অবাক। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার কংগ্রেসের সব কমিটি চেয়ারম্যানকে দেওয়া চিঠিতে এমন তথ্য জানান জেমস কমি। এরপরই শুরু হয়েছে হইচই। বিষয়টি দ্রুত সংবাদমাধ্যমে এসেছে। নির্বাচনী প্রচারকালে এফবিআই পরিচালকের এমন পদক্ষেপকে হিলারি ক্লিনটনের জন্য অমঙ্গলের বার্তা বলে মনে করছেন তাঁর সমর্থকেরা। পাশাপাশি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা মনে করছেন, এবারে হিলারি ঠিকই ধরা খাবেন। 
পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারি ক্লিনটন ব্যক্তিগত ই-মেইলে রাষ্ট্রীয় বিষয়ের লেনদেন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্পর্শকাতর তথ্য অন্যদের হাতে চলে গেছে বলে অভিযোগ ছিল। প্রায় এক বছর ধরে তদন্তের পর গত জুলাই মাসে এফবিআই কংগ্রেসে প্রতিবেদন দাখিল করে। সে সময় এফবিআই-প্রধান জেমস কমি বলেন, হিলারির বিরুদ্ধে তদন্তে কিছু পাওয়া যায়নি। সাবেক কংগ্রেসম্যান অ্যান্থনি উইনারের বিরুদ্ধে তদন্তের সূত্র ধরে গতকাল শুক্রবার এফবিআই পরিচালকের কাছে নতুন তথ্য আসে। তড়িঘড়ি করে ওই দিন সকালেই তিনি কংগ্রেসের সব কমিটি-প্রধানের কাছে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানান। চিঠিতে বলা হয়েছে, অ্যান্থনি উইনারের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে গিয়ে হিলারির ওই ই-মেইলের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব ই-মেইলের মধ্যে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য আছে কি না বা কোনো আইনের লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা বলা হয়নি। প্রভাবশালী দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে এ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভাগীয় প্রধানের পদক্ষেপ নিয়ে এফবিআইতেই অস্থিরতা শুরু হয়েছে। এফবিআই মনে করছে, তদন্তে অপরাধমূলক কিছু পাওয়ার আগেই কংগ্রেসকে চিঠি দিয়ে হিলারির নির্বাচনী প্রচারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারেন জেমস কমি। সাধারণত,
নির্বাচনের ঠিক আগে আগে এমন পদক্ষেপ নজিরবিহীন বলে মনে করা হচ্ছে। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, তদন্ত করার আগেই হিলারির ই-মেইল নিয়ে এফবিআই পরিচালকের এমন মন্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগে (জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট) তোলপাড় চলছে। ডেমোক্র্যাট সিনেটর ডায়ান ফেইন্সটাইন বলেছেন, নির্বাচনের প্রভাব বিবেচনা করেই এফবিআই এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে আরও সতর্কতা দরকার ছিল। তবে রিপাবলিকানরা এফবিআই পরিচালকের পদক্ষেপের প্রশংসা করছেন। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ ফুরফুরে মেজাজে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ওয়াটারগেটের মতোই হিলারি ক্লিনটনের ই-মেইল কেলেঙ্কারি। শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে তিনি আশা করেন। শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী উত্তেজনার মধ্যে ই-মেইল নিয়ে হিলারির প্রচারশিবিরকে দিনভর বিব্রত থাকতে হয়েছে। হিলারি বলেছেন, ই-মেইলে কী পাওয়া গেছে, সব খোলাসা করে বলা হোক।

No comments

Powered by Blogger.