ট্রাম্প ‘বিরোধিতায়’ বিপাকে টেড ক্রুজ

ক্লিভল্যান্ডের দলীয় কনভেনশনে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনান্ড ট্রাম্পকে সমর্থন না দেয়ায় সমর্থকদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের শিকার হয়েছেন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতা টেড ক্রুজ। বৃহস্পতিবার বিবিসি জানায়, রিপাবলিকানদের চার দিনব্যাপী আয়োজিত সম্মেলনে মঞ্চে উঠে বক্তব্য দেন টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ। এ সময় ট্রাম্পের নামটি পর্যন্ত উচ্চারণ করেননি তিনি। বরং মূল মঞ্চ থেকে দেয়া ভাষণে ট্রাম্পকে অনুমোদন করতে অস্বীকৃতি জানান ক্রুজ। এরপরই প্রতিবাদে হৈ-হুল্লোড় শুরু করেন ট্রাম্প-সমর্থকরা। ক্রুজের প্রতি গালাগালি করতে থাকেন ডেলিগেটরা এবং ‘ট্রাম্প’ ‘ট্রাম্প’ রব শুরু হয়ে যায় সম্মেলন কেন্দ্রজুড়ে। কনভেনশনে নিজের বক্তব্য দেয়ার সময় প্রত্যেক রিপাবলিকানকে নিজেদের বিবেক অনুযায়ী ভোটদানের পরামর্শ দেন ক্রুজ। তিনি বলেন, ‘তুমি যদি তোমার দেশ ও সন্তানদের ভালোবাস তাহলে তুমি উঠে দাঁড়াবে এবং কথা বলবে। আর ভোট দেবে নিজস্ব বিবেচনায়।
নীতির পক্ষে যিনি দাঁড়াবেন আমাদের এমন নেতা চাই।’ ক্রুজ ট্রাম্পের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন না এমনটা স্পষ্ট হওয়া মাত্রই উপস্থিত দর্শক তার উদ্দেশে ‘ছি’ ‘ছি’ করতে থাকেন। বক্তৃতা শেষে মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার পর ক্রুদ্ধ রিপাবলিকান-সমর্থকরা ক্রুজ ও তার স্ত্রী হেইডিকে ঘিরে ধরে উচ্চৈঃস্বরে গালাগালিও করেন। এ সময় অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে সম্মেলন কেন্দ্রের অন্য প্রবেশপথ দিয়ে ভেতরে আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার চোখে-মুখে ছিল স্পষ্ট বিরক্তির চাপ। ‘ট্রাম্প’ ‘ট্রাম্প’ চিৎকারের মধ্যে সিনেটর টেড ক্রুজ ও তার স্ত্রী হেইডি ক্রুজ দ্রুত সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন। এদিকে বুধবার প্রায় মধ্যরাতে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সিনেটর টেড ক্রুজের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করে একটি টুইট বার্তা দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, টেড ক্রুজ দলের সমর্থকদের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাননি। সিএনএন জানায়, অপমানিত ক্রুজ মনোনয়নের লড়াইয়ে পরাজিত হলেও চেষ্টা করেছিলেন সম্মেলনের ডেলিগেটদের নিজের পক্ষে টেনে ট্রাম্পের মনোনয়ন আটকে দিতে।
দলীয় প্রাইমারিতে ডেলিগেট সংগ্রহের দিক থেকে ট্রাম্পের পরের অবস্থানেই ছিলেন টেড ক্রুজ। এতে ট্রাম্পের ১ হাজার ৫৪২টি ডেলিগেটের বিপরীতে টেড ক্রুজের সংগৃহীত ডেলিগেট সংখ্যা ৫৬০টি। বাছাই পর্বের নির্বাচনেই ট্রাম্প ও ক্রুজ একে অন্যের সঙ্গে বাকযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন। ট্রাম্প ক্রুজের নাম দিয়েছিলেন ‘মিথ্যুক’। ক্রুজের স্ত্রী হেইডিকে ‘কুশ্রী’ ও বাবা রাফায়েলকে জন এফ কেনেডি হত্যা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন ট্রাম্প। মনোনয়ন-যুদ্ধের শত্রুতাকে কেন্দ্র করে সম্মেলনে উপস্থিত না থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন ক্রুজ। এতে দলের বিভক্তি আরও বাড়ার আশংকায় সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্রুজকে ভাষণ দিতে আমন্ত্রণ জানান ট্রাম্প। ক্রুজ ১৮ মিনিটের ভাষণের শুরুতে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান। তবে ট্রাম্পের বিপক্ষেই ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। রিপাবলিকানরা বলছে, ২০২০ সালে আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন ক্রুজ। সে ক্ষেত্রে ডেলিগেটদের মধ্যে নিজের নেতিবাচক ইমেজ সৃষ্টি করলেন তিনি। পতাকা পোড়ানোর চেষ্টাকালে গ্রেফতার ১৭ : এদিকে ক্লিভল্যান্ডে বুধবার রিপাবলিকান দলের কনভেনশন চলাকালে অধিবেশন হলের বাইরে মার্কিন পতাকা পোড়ানোর চেষ্টাকালে ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

No comments

Powered by Blogger.