টেরেসাই হচ্ছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী

লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে টেরেসা মে।
মার্গারেট থ্যাচারের পর তিনিই যুক্তরাজ্যের
প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। এএফপি
টেরেসা মেই হচ্ছেন যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। ডেভিড ক্যামেরনের উত্তরসূরি হওয়ার দৌড় থেকে সর্বশেষ প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রিয়া লিডসম গতকাল সোমবার সরে দাঁড়ানোর ফলে টেরেসার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গেল। এদিকে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন বলেছেন, আগামীকাল বুধবারই পার্লামেন্টে প্রশ্নোত্তর পর্বের পর রানির কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করবেন তিনি। টেরেসা মে যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে মার্গারেট থ্যাচারের পর দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করতে চলেছেন। গত ২৩ জুন অনুষ্ঠিত গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদের পক্ষে রায় যাওয়ার পরপরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। সেপ্টেম্বরে তাঁর বিদায় নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন নেতা নির্বাচন দ্রুত সম্পন্ন হওয়ায় ক্যামেরন বুধবারই বিদায় নিচ্ছেন। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর টেরেসা মে একটি ‘উন্নততর যুক্তরাজ্য’ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের ইইউ ত্যাগের বিষয়টি সফলতার দিকে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।  
ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে প্রচার চালানো অ্যান্ড্রিয়া লিডসম গতকাল সোমবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলেন, টেরেসা মে দলের ৬০ শতাংশ এমপির সমর্থন পেয়েছেন। আর তাঁর নিজের রয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ এমপির সমর্থন। তাই দলীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও ইইউ ছেড়ে আসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে টেরেসা মেই অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থানে রয়েছেন। টেরেসা মে ইইউতে থাকার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। কনজারভেটিভ পার্টির ইইউবিরোধী অনেকের দাবি ছিল, গণভোটের ফলের পরিপ্রেক্ষিতে ইইউ ত্যাগের পক্ষের কারোই প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত। লিডসম সরে দাঁড়ানোর ফলে ইইউবিরোধী প্রচারণা যাঁরা চালিয়েছেন, তাঁদের কেউ আর জবাবদিহির স্থানে অবশিষ্ট রইলেন না। ইইউবিরোধী অন্যতম নেতা কনজারভেটিভ পার্টির বরিস জনসন শুরুতেই নাটকীয়ভাবে সরে যান। আরেক নেতা বিচারবিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল গোভ এমপিদের ভোটাভুটিতে বাদ পড়েন। আর আজীবন ইইউবিরোধী ইউকে ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টির (ইউকিপ) নেতা নাইজেল ফারাজ বিদায় নিয়েছেন নেতৃত্ব থেকে ইস্তফা দিয়ে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, ইইউ ত্যাগ করলে যুক্তরাজ্য লাভবান হবে বলে যেসব ওয়াদা করা হয়েছিল, তা সত্য প্রমাণিত না হলে কে জবাব দেবেন?
লেবার পার্টিতে নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত পথে যাত্রা শুরু করেছে। সম্প্রতি ছায়া মন্ত্রিসভার পদ থেকে সরে দাঁড়ানো অ্যাঞ্জেলা ইগল দলের ২০ শতাংশ এমপির সমর্থন নিয়ে দলনেতা জেরেমি করবিনের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। ফলে নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া লেবার দলকে পুনরায় শুরু করতে হবে। জেরেমি করবিন ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি নেতৃত্ব নির্বাচনে আবার প্রার্থী হবেন। তৃণমূলে তাঁর যে বিপুল সমর্থন, তাতে তিনি পুনরায় নেতা নির্বাচিত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। টেরেসা মে বয়স ৫৯ বছর
যুক্তরাজ্যের ইইউয়ে থাকার পক্ষে প্রচার চালালেও অভিবাসী প্রশ্নে কঠোর
পড়াশোনা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে
১৯৯৭ সাল থেকে এমপি
৬ বছর ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কট্টর ইসলামপন্থী বক্তাদের বিষয়ে কঠোর মনোভাবাপন্ন
সমলিঙ্গের বিয়ের পক্ষে কাজ করেছেন
সূত্র: এএফপি

No comments

Powered by Blogger.