চট্টগ্রামের ডরমিটরিটি চালু করুন

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের আওতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ যৌথভাবে চট্টগ্রামে নারী পোশাকশ্রমিকদের জন্য যে ডরমিটরি নির্মাণ করেছে, আড়াই বছরেও তা চালু না হওয়ার বিষয়টি বিস্ময়কর। একটা ভালো ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ কেন যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা হয়নি, তা বোধগম্য নয়। ৩৬ কাঠা জমির ওপর ছয়টি পাঁচতলা ভবন নিয়ে ডরমিটরিটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ২২ কোটি টাকা। এই বিনিয়োগের সুফল যত তাড়াতাড়ি মেলে, ততই মঙ্গল। সাধারণ এই হিসাবটি তো বিবেচনায় থাকা উচিত। মোট ২৪৪টি কক্ষে তিন হাজার নারী শ্রমিকের থাকার এই ব্যবস্থাটি চালু হলে তৈরি পোশাকশিল্পের নারী শ্রমিকদের আবাসনের ক্ষেত্রে একটা অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে। বিজিএমইএ সব টাকা পরিশোধ করেনি বলে ডরমিটরি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া আটকে ছিল—প্রকল্প পরিচালকের এই বক্তব্য সঠিক হলে বিষয়টি হতাশাব্যঞ্জক। তৈরি পোশাকশিল্প এ দেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ শিল্প খাত; শ্রমিকদের স্বার্থে অর্থলগ্নির ক্ষেত্রে শিল্পমালিকদের অনুদার দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থনযোগ্য নয়।
অবশেষে বিজিএমইএ টাকা পরিশোধ করেছে এবং ডরমিটরির ভবনগুলো পোশাকশিল্প মালিকদের নামে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে; আগামী মাস থেকে ভবন হস্তান্তরের কাজও শুরু হতে পারে বলে খবর বেরিয়েছে। এটা ভালো খবর। হস্তান্তর দ্রুত সম্পন্ন করে নারী শ্রমিকদের কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া শুরু করা হোক। এসব কক্ষে থাকার জন্য শ্রমিকদের ভাড়া পরিশোধ করতে হবে; ভাড়ার অঙ্ক যেন কম হয়, যাতে আবাসিক এই সুবিধা তাঁদের আর্থিক সামর্থ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হয়, যেন তাঁরা এর উপকার পান। এ ডরমিটরি নির্মাণ করা হয়েছে সেসব নারী শ্রমিকদের জন্য, যাঁরা পরিবার থেকে দূরে থাকেন। কক্ষ বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখা দরকার। একটি কমপ্লেক্সের মধ্যে একই সঙ্গে তিন হাজার নারী শ্রমিক বাস করবেন; এ ক্ষেত্রে ডরমিটরির সার্বিক সুব্যবস্থাপনা দরকার।

No comments

Powered by Blogger.